নিউজ শর্ট ডেস্ক: আমাদের দেশের অত্যন্ত সম্মানীয় এবং উচ্চ পদের একটি সরকারি চাকরি হলো আইএএস অফিসার (IAS Officer)। সকলেই জানেন এই চাকরি পাওয়া মুখের কথা নয় একেবারেই। এই চাকরিতে যেমন সম্মান আর অর্থ রয়েছে তেমনি এই চাকরি পেতে গেলে প্রয়োজন দারুন পড়াশোনা আর অধ্যাবশায়ের।
আমাদের দেশের কোটি কোটি মানুষের স্বপ্ন একজন আইএস অফিসার হওয়া। কিন্তু সেই চাকরি,অর্থ সহ সমস্ত জাগতিক মোহমায়া ত্যাগ করে ঈশ্বরের সাধনায় নিজের জীবন নিবেদন করেছিলেন প্রাক্তন আইএএস অফিসার সুনীল পট্টনায়ক ( Sunil Patnaik)। একটা সময় টানা ২৩ বছর ধরে আইএস অফিসার হিসেবে চাকরি করেছিলেন তিনি।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই সরকারি চাকরি ছেড়েই তিনি বেছে নেন সাধুর জীবন (Monk Life)। সমস্ত জাগতিক মোহমায়া ত্যাগ করতে দুবার’ও ভাবেননি তিনি। যদিও এই সিদ্ধান্ত তিনি রাতারাতি নিতে পারেননি। বহুদিন ধরে স্বামী শিবানন্দের শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। যা একসময় তাঁর মনে এতটাই গভীর দাগ কেটেছিল যে তিনি চাকরি জীবন ছেড়ে পুরোপুরি একজন সাধুর জীবন বেছে নেন।
সালটা ছিল ১৯৯০। সেই সময় প্রাক্তন আইএস অফিসার সুনীল আর পাঁচ জন ভক্তের মতোই হৃষিকেশে স্বামী শিবানন্দের আশ্রমে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখান থেকেই তাঁর জীবনে খুলে যায় একেবারে নতুন এক দিগন্ত। জানা যায় বর্তমানে এই সুনীল পট্টনায়কের নাম হয়েছে স্বামী নির্লিপ্তানন্দ (Swami Nirliptananda)।
আরও পড়ুন: দেশবাসীর জন্য বিরাট ঘোষণা! ৫০০ টাকার নোট নিয়ে আরও এক নতুন নিয়ম আনলো RBI
একটানা ২৩ বছর ধরে এক সময় যে ক্ষমতার শীর্ষে ছিলেন তিনি সেই ক্ষমতাই অবলীলায় ছেড়ে তিনি সম্পূর্ণরূপে মগ্ন হয়ে পড়েন ঈশ্বর সাধনায়। যদিও এই সিদ্ধান্ত নিতে তার সময় লেগেছিল ২২ বছর। জানা যায় মুসৌরিতে একদিন ন্যাশনাল অ্যাকাদেমি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে আইএএস-এর ট্রেনিং নিচ্ছিলেন তিনি।
এমন সময় একদিন সপ্তাহের শেষের সমস্ত পড়ুয়ারা নানান দিকে ঘুরতে বেরিয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় সুনীল তাঁর দুই বন্ধুকে নিয়ে চলে যান ঋষিকেশে স্বামী শিবানন্দের আশ্রমে। আর সেদিন থেকেই বদলে যেতে শুরু করে তাঁর জীবনের আদর্শ।
জানা যায় সুনীল পাটনায়েকের প্রথম পোস্টিং হয়েছিল দন্ডায়কারণ্যে। সেই গ্রামের মানুষ আজও মনে রেখেছেন তাঁকে। আসলে এত বড় মাপের একজন মানুষ হয়েও জীবনে কোনদিন অহংকার শব্দটা ছুঁতে পারেনি তাঁকে। তাই বাংলো বাড়ি-গাড়ি নিয়ে কোনদিনও মাথাব্যথা ছিল না তাঁর। সমস্ত বিলাসিতা আর আরামের জীবন ছেড়ে ওই গ্রামের বাসিন্দাদের সাথেই মাটিতে একটা পাটি বিছিয়ে চাদর পেতে শুয়ে পড়তেন তিনি।