বাংলায় আসবে নতুন শিল্প। সিঙ্গুরের মাটিতে আবার নতুন করে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে টাটা গোষ্ঠী (Tata Group)। ২০০৬ সালে এই সিঙ্গুরে কারখানা তৈরী হওয়া নিয়েই তোলপাড় হয়েছিল বাংলার রাজনীতী। একসময় যেখানে ন্যানো গাড়ির কারখানা গড়ে উঠেছিল, সেখানেই এবার ই-সাইকেল তৈরির কারখানা তৈরি হতে পারে। সম্প্রতি এশিয়ানেট বাংলার একটি প্রতিবেদনে এই খবর জানানো হয়েছে। চলুন আজকের প্রতিবেদনে সেই ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সিঙ্গুরে টাটার নতুন পরিকল্পনা
টাটা গোষ্ঠীর মালিকানাধীন স্ট্রাইডার সাইকেল কোম্পানি সিঙ্গুরে ই-সাইকেল তৈরির পরিকল্পনা করছে। যেমনটা জানা যাচ্ছে, মূলত ভোল্টিক এক্স এবং ভোল্টিক গো মডেলের ই-সাইকেল এখানে তৈরি করা হবে। সিঙ্গুরে ন্যানো গাড়ির কারখানা যেখানে শুরু হওয়ার কথা ছিল সেখানেই নতুন শিল্প স্থাপনের উদ্যোগ নিচ্ছে টাটা। যদি সেটা হয় তাহলে সিঙ্গুরবাসীর কাছে এটা সত্যিই বড় আশার খবর।
ন্যানো গাড়ি প্রকল্পের ইতিহাস
২০০৬ সালে সিঙ্গুরে টাটার ন্যানো গাড়ির কারখানা তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। তবে, ‘অনিচ্ছুক কৃষক’ এবং তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেসের আন্দোলনের ফলে টাটা গোষ্ঠীকে ২০০৮ সালে বাংলা ছাড়তে হয়। এরপরে গুজরাটের সানন্দে স্থানান্তরিত হয় ন্যানো কারখানা। ২০০৯ সালে সেখান থেকে ১ লাখ টাকা দামের ন্যানো গাড়ি উৎপাদন শুরু হয়।
সিঙ্গুরের বর্তমান পরিস্থিতি
২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর টাটার জমি ফেরত দেওয়া হয় কৃষকদের। সেই অর্ধনির্মিত কারখানা ভেঙে ফেলা হলেও, আজও সেই স্থানে ন্যানো প্রকল্পের কিছু চিহ্ন রয়ে গেছে। তবে, নতুন করে টাটার ফিরে আসার সম্ভাবনা সিঙ্গুরকে আবারও শিল্প নগরী হিসাবে গড়ে তুলতে পারে। ই-সাইকেল কারখানা স্থাপনের ফলে একদিকে যেমন স্থানীয় মানুষদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে তেমনি রাজ্যে পরিবেশ-বান্ধব যানবাহনের উৎপাদন শুরু হবে।
সিঙ্গুরে শিল্পের ভবিষ্যৎ
টাটার এই বিনিয়োগ সিঙ্গুর তথা বাংলার অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এই নতুন ই-সাইকেল প্রকল্প সফল হলে, সিঙ্গুর আবারও শিল্প কেন্দ্র হিসাবে পরিচিতি পাবে। টাটা এবং সিঙ্গুর নাম দুটিই আজও একে অপরের সঙ্গে জড়িত। আগামীর সিঙ্গুর কি সত্যি নতুন দিনের সূচনা দেখবে? এই প্রশ্নের উত্তর সময়ই দেবে।