নব্বইয়ের দশকের অন্যতম খ্যাতনামা মুখ ছিলেন নীলিমা আজিম (Neelima Azeem)। বলিউডের (Bollywood) একাধিক ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিনয় করছেন তিনি। মুমতাজ চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মন জিতে নেওয়া এই অভিনেত্রী আজ ইন্ডাস্ট্রি থেকে অনেক দূরে। আমরা কথা বলছি শাহিদ কাপুর (Sahid Kapoor’s Mother) এবং ঈশান খট্টরের মা তথা অভিনেত্রী নীলিমা।
যদিও বলিপাড়ার তাকে নিয়ে বিতর্ক কিছু কম নয়। প্রেম করে বিয়ে করলেও খুব বেশিদিন টেকেনি সেই সম্পর্ক। তবে এরপর আবারও প্রেমে পড়েন নীলিমা। দ্বিতীয় বিয়ে করলেও আগের মতোই বিচ্ছেদের সম্মুখীন হতে হয় তাকে। তবে দুবার বিচ্ছেদের পর যখন তৃতীয়বার বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তখন তাকে নিয়ে সমালোচনার শেষ থাকেনি। তবে দুঃখের বিষয় এই বিয়েও টেকেনি।
নীলিমার ব্যক্তিগত জীবনের কথা বললে, তার বাবা একজন সাংবাদিক ছিলেন। উত্তরাখণ্ড থেকে নিজের স্কুলিং কম্প্লিট করেছিলেন অভিনেত্রী। এরপর হায়ার এডুকেশনের জন্য তিনি চলে আসেন দিল্লীতে। এবং সেখান থেকেই শুরু করেন অভিনয়ের মহড়া। পণ্ডিত বিরজু মহারাজের কাছে কত্থকের তালিমও নিতেন তিনি। এছাড়াও তার মেন্টর ছিলেন শুক্ল, শ্রীমতি রেবা বিদ্যার্থী এবং পণ্ডিত দেবীলালজির মত গনমান্য ব্যক্তিত্বরা।
নাচের পাশাপাশি অভিনয়ের প্রতি এতটাই আগ্রহী ছিলেন যে, নাম লিখিয়ে ফেলেন থিয়েটারে। পাশাপাশি শেখেন গান। এরপর ১৯৮৯ সালে ‘ফির ওয়াহি তালাশ’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে ছোট পর্দায় অভিষেক হয় নীলিমার। তবে খ্যাতি এনে দেয় মুমতাজ চরিত্রটি। ছোটপর্দার এক অতিপরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন তিনি। এবং অবশেষে তিনি পা বাড়ান বড়পর্দার দিকে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালে অভিনয় শুরুর আগেই অভিনেতা পঙ্কজ কপূরের সঙ্গে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। দুবছরের মধ্যে তার প্রথম সন্তান শাহিদের জন্ম হয়। তবে এই সম্পর্ক খুব বেশিদিন টেকেনি। শাহিদ তিন বছরে পা দিতেই আলাদা হয়ে যায় তাদের পথ। এরপর সিঙ্গেল মাদার হিসেবে শাহিদকে একা মানুষ করেন নীলিমা। এবং সাথে সাথে তার জীবনে আসে নতুন প্রেম অভিনেতা রাজেশ খট্টর। জন্ম হয় ঈশানের এবং অবশেষে সেই বিয়েও ভেঙে যায়।
এইসব ঝামেলার মধ্যে নষ্ট হতে বসে ঈশানের কেরিয়ার। এক পুরোনো সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘আমার মা খুব শক্ত মনের মানুষ। মাকে যে কী ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তা স্বচক্ষে দেখেছি। আমার জীবনে অনেক কঠিন এবং খারাপ সময় এসেছে। তবে অতীতচর্চা করতে পছন্দ করি না আমি।’’ তিনি আরো বলেন, নীলিমার পাশাপাশি শাহিদও আগলে রাখতেন তাকে। এই বিষয়ে শাহিদ একবার বলেছিলেন, ‘‘আমার বাবা কোনও দিনও জিজ্ঞাসা করেননি যে আমি বড় হয়ে কী হতে চাই। বাবা আমাদের সঙ্গে থাকতেন না। আমিও এ বিষয়ে কিছু জানাইনি বাবাকে। নিজের দক্ষতায় অভিনয়ে নেমেছি। তারকাপুত্র হওয়ার কোনও সুবিধা নিইনি।’’