শিগগিরই ভারত ও আফ্রিকার মধ্যে ভৌগোলিক দূরত্ব আরও কমে যাবে। হ্যাঁ, এটা শুনে অবাক লাগতে পারে! তবে এটি বাস্তব হওয়ার পথে। একটি ঐতিহাসিক সমঝোতার মাধ্যমে ভারত থেকে আফ্রিকা আরও কাছে আসছে, যেখানে ব্রিটেন চাগোস দ্বীপপুঞ্জের নিয়ন্ত্রণ মরিশাসের হাতে তুলে দিতে রাজি হয়েছে। এই সমঝোতায় ভারতের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে, যা দুই মহাদেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও মজবুত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
চাগোস দ্বীপপুঞ্জ: স্বাধীনতার পথে আরেক ধাপ
চাগোস দ্বীপপুঞ্জ, যা বছরের পর বছর ব্রিটিশদের অধীনে ছিল, অবশেষে মরিশাসের কাছে হস্তান্তরিত হতে চলেছে। ভারত মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত এই দ্বীপপুঞ্জে ব্রিটেন ও আমেরিকার সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, বিশেষ করে দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপে। মরিশাস বহুদিন ধরেই এই দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্ব দাবি করে আসছে, এবং এই নিয়ে বহুবার আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা হয়েছে। অবশেষে, ব্রিটেন ঘোষণা করেছে যে তারা মরিশাসের কাছে চাগোস দ্বীপপুঞ্জের অধিকারের বিষয়টি মেনে নেবে। তবে দিয়েগো গার্সিয়া, যা কৌশলগত কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আপাতত ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রণে থেকে যাবে, কারণ সেখান থেকে তারা ভারত মহাসাগরে নজরদারি চালায়।
ভারতের ভূমিকাঃ নেপথ্যে কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ
এই সমঝোতা বাস্তবায়নে ভারতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মরিশাসের সঙ্গে আলোচনায় ভারত কৌশলগতভাবে পাশে ছিল এবং ঔপনিবেশিক শাসনের শেষ অবশিষ্টাংশ ভেঙে ফেলার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছিল। এক্ষেত্রে ভারত মূলত নেপথ্যে থেকেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। ব্রিটেন এবং মরিশাস উভয়েই যৌথ বিবৃতিতে ভারতের এই ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে।
আফ্রিকা ভারতকে আরও কাছাকাছি টানছে
চাগোস দ্বীপপুঞ্জের হস্তান্তরের ফলে ভারত ও আফ্রিকার মধ্যে দূরত্বও অনেকটা কমে আসবে। গুজরাট উপকূল থেকে আফ্রিকার গুয়ার্দাফাই অন্তরীপের দূরত্ব বর্তমানে প্রায় ২২০০ কিলোমিটার। তবে চাগোস দ্বীপপুঞ্জের নিকটতম দ্বীপ থেকে ভারতের কন্যাকুমারীর দূরত্ব প্রায় ১৫৭৫ কিলোমিটার। এখন, ব্রিটেন যখন চাগোস দ্বীপপুঞ্জ মরিশাসের কাছে হস্তান্তর করবে, তখন আফ্রিকা ও ভারতের মধ্যে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যাবে। এটা শুধু ভৌগোলিক দূরত্ব নয়, দুই অঞ্চলের মধ্যে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করবে।