এখানে সাপ দেবী, ছোবল প্রসাদ, বিষধর সাপ বাচ্চাদের বন্ধু, জানেন বাংলার এই গ্রামের গল্প!

নিউজশর্ট ডেস্কঃ সাপ(Snake) এই নামটি শুনলেই আজও বড় বড় সাহসী মানুষের বুক কেঁপে ওঠে। সকলেই এর থেকে দূরত্ব রেখে চলেন। সাপের এক ছোবলে ভবলীলা সাঙ্গ হতে পারে আপনার। সহজ কথায়,  এক ছোবলেই আপনি হবেন ছবি। মাঝেমধ্যেই নানান খবর উঠে আসে এই সাপের ছোবলে মৃত্যুকে নিয়ে। তবে জানলে অবাক হবেন, পশ্চিমবঙ্গের(West Bengal) বুকে এমন কিছু গ্রাম রয়েছে যারা দিনের পর দিন বসবাস করে চলেছে এই বিষধর সাপের সঙ্গে।

এই গ্রামগুলি পূর্ব বর্ধমানের(East Burdwan) মঙ্গলকোট ও ভাতার অঞ্চলে অবস্থিত। মোট ৪টি এমন গ্রাম রয়েছে যেখানে মানুষ কেউটে জাতীয় এক ধরনের সাপকে দেবী রূপে পুজো করেন। এই ৪টি গ্রাম হল মুসারু, পলসোনা, ছোট পোষলা ও বড় পোষলা। বিষধর এই সাপগুলোকেই ঈশ্বরের ন্যায় শ্রদ্ধা করেন গ্রামের মানুষেরা। প্রতিনিয়ত চড়ান ফুল, বেলপাতা, ভোগ।

জানলে অবাক হবেন এই গ্রামে সাপকে সাপ বলা হয় না। হ্যা ঠিকই শুনছেন! সাপকে এখানে বলা হয় ঝাঁকলাই । আর ঝাঁকলাই হল এই গ্রামের ইষ্ঠদেবী । বছরের পর বছর ধরে এই দেবীকেই গ্রামবাসীরা পুজো করে আসছেন। প্রতিদিন গুরু পূর্ণিমার পরের দিন ধুমধাম করে পুজো করা হয় এই দেবীর। বয়স্ক মানুষরা এই সাপকে কালনাগিনী বলতেই স্বচ্ছন্দ। তাদের রয়েছে আরেক আলাদা বিশ্বাস। তাদের মতে, মনসামঙ্গল কাব্যে লক্ষিন্দরকে যে সাপ ছোবল মেরেছিল সেই কালনাগিনী সাপই তাদের দেবী। এই সাপকেই তারা পুজো করেন দুধ কলা দিয়ে।

এখানে প্রতিটি বাড়িতেই সাপের দেখা মেলে। ঠিক যেন তারা বাড়ির গৃহপালিত প্রাণী। মানুষের সাথে একসঙ্গেই বসবাস করে তারা। বাইরের দুনিয়ার মতন সাপদের তাড়ানো বা মেরে ফেলার কথা ভাবতেই পারেন না গ্রামবাসীরা। অদ্ভুতভাবে এখানে সাপের ছোবল মারার ঘটনাও খুব কম।

যদিও কেউ সাপের ছোবল খায় তাকে তৎক্ষণাৎ নিয়ে যাওয়া হয় ঝাঁকলাই দেবীর মন্দিরে। সেখানে বিশেষ মাটি ছোবল খাওয়া অংশে লেপে দিলেই সুস্থ হয়ে যান সেই মানুষ। দেবী কারুর প্রাণ নেন না। আজকের যুগে দাঁড়িয়েও এই ধরনের গ্রাম সত্যি বিস্ময়কর।

 

Avatar

Papiya Paul

X