পার্থ মান্নাঃ শিলিগুড়ি শহরে এক হৃদয়বিদারক ও নিন্দনীয় ঘটনা ঘটেছে। একটি কুকুরকে ধর্ষণ করা হয়েছে। রবিবার শিলিগুড়ির এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করে। এই ঘটনা শুধু পশুপ্রেমীদের মধ্যে নয়, গোটা শহরেই তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রিয়া রুদ্র জানান, “আমরা সংবাদপত্রে বিষয়টি দেখে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি। দোষীর শাস্তি হওয়া একান্ত প্রয়োজন।” নির্যাতনের শিকার কুকুরটিকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং পুলিশের অনুমতি নিয়ে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও জানা যাচ্ছে, নির্যাতিত কুকুরটি বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা এবং তার যৌনাঙ্গে গুরুতর ক্ষত রয়েছে। তবে ধর্ষণের ফলে এই ক্ষত হয়েছে কি না, তা চিকিৎসার পরই নিশ্চিত করা যাবে।
পুলিশের পদক্ষেপ এবং তদন্ত
এই ঘটনায় শিলিগুড়ি থানায় পশু নির্যাতন আইনে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশের মতে, দোষীকে ধরার জন্য প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে এবং ঘটনাটির সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। কোর্ট মোড়ের ট্রেজারি বিল্ডিংয়ের উল্টো দিকের একটি দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে ধর্ষণের ঘটনা ধরা পড়েছে। ফুটেজ অনুযায়ী, ১২ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার পর ঘটনাটি ঘটে। ফুটেজে দেখা যায়, এক ব্যক্তি রাস্তার পাশে শুয়ে থাকা কুকুরটিকে ধর্ষণ করে। যদিও এই ফুটেজের সত্যতা এখনও যাচাই করা হয়নি।
পশুপ্রেমীদের প্রতিক্রিয়া
শিলিগুড়ির একাধিক সংগঠন এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সোহিনী গঙ্গোপাধ্যায়, যিনি আরেকটি সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করেন, বলেন, “যারা অবলা প্রাণীদের ওপর নির্যাতন করে, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।” তিনি আরও জানান যে, শহরের বিভিন্ন স্থানে পশু নির্যাতনের আরও কিছু ঘটনা ঘটেছে, এবং প্রত্যেক ক্ষেত্রেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
এদিকে, ভক্তিনগর থানার পুলিশের উদ্যোগে একটি কুকুর হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনা শিলিগুড়ি শহরের পশুপ্রেমী সংগঠনগুলিকে আরও সতর্ক করে তুলেছে এবং প্রাণীদের সুরক্ষায় পুলিশ প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে।
প্রসঙ্গত, শিলিগুড়ি শহরে পশু নির্যাতনের এই ঘটনা নতুন নয়। তবে এই ঘটনা পশুপ্রেমী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার সৃষ্টি করেছে। পশুদের সুরক্ষায় আরও কঠোর আইন প্রণয়ন এবং যথাযথ আইনানুগ পদক্ষেপের দাবি ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। শিলিগুড়ি শহরের মানুষকে এই বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের নিন্দনীয় ঘটনা আর না ঘটে।