দিন দিন বেড়েই চলেছে বায়ু দূষণ, অথচ দিল্লির দূষণ কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে তেমন কোনোও অগ্রগতি নেই। এই বিষয়ে ভারতের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় (Supreme Court) বৃহস্পতিবার নিজের পর্যবেক্ষণে কঠোর সমালোচনা করেছেন। আদালত জানায়, বায়ু দূষণ রোধে গঠিত কমিশন (কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট বা CAQM) বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা বললেও সেগুলো বাস্তবে কার্যকর হচ্ছে না।
বায়ু দূষণ রোধে সুপ্রিম কোর্টের উদ্বেগ
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এ এস ওকা বলেন, “সবাই জানে, আলোচনা চলছে, কিন্তু কাজ কিছুই হচ্ছে না। এটিই কঠোর বাস্তব।” আদালত জানায়, বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ কৃষকদের খড় পোড়ানো, এবং এ বিষয়ে সিএকিউএম এখনও পর্যন্ত কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তা বিস্তারিতভাবে জানাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু, গত ৯ মাসে মাত্র তিনবার বৈঠক হয়েছে, এবং খড় পোড়ানো নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
বিচারপতি আরও বলেন, “গত ২৯ অগাস্টের পর কোনো বৈঠক হয়নি। প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে গঠিত এই কমিটি কবে নীতি নির্ধারণ করবে?” তিনি তৃণমূল স্তরে কার্যকরী পদক্ষেপের অভাবের কথা উল্লেখ করেন এবং বলেন, যতক্ষণ না বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউই মাথা ঘামাবে না।
আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অভাব
সরকারের আইনজীবী আদালতে জানান, যারা কমিশনের নিয়ম ভঙ্গ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে FIR করা হয়েছে। তবে আদালত এটুকুতে সন্তুষ্ট হয়নি। আদালত বলছে, আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে শিথিল ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, অথচ সিএকিউএম আইনের ১৪ এবং পরিবেশ রক্ষা আইনের ১৫ ধারায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নিদান রয়েছে। এরপর সরকার পক্ষের আইনজীবী জানান, দূষণের মাত্রা কমায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ধারা প্রয়োগ করা হয়নি। এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট বলে, “আপনার দেওয়া নির্দেশ আপনাকেই কার্যকর করতে হবে। ২০২৪ সালে খড় পোড়ানোর ১২৯টি অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে। কেন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি?”
সম্ভাব্য সমাধান কি?
দিল্লির বায়ু দূষণ সমস্যার সমাধান করতে হলে, শুধু আলোচনা নয়, কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন। সরকারের উচিত হবে সিএকিউএমের কার্যক্রমে দ্রুততা আনা এবং আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার আলোকে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।