ভারতের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় (Supreme Court) শুক্রবার রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। যারা পরিযায়ী শ্রমিকদের রেশন কার্ড (Ration Card) প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে। কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে যে রাজ্যগুলির খাদ্য ও নাগরিক সরবরাহ দপ্তরের সচিবরা ছয় সপ্তাহের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় তাদের ব্যক্তিগতভাবে আদালতে হাজির হতে হবে।
বিগত কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পরেও বেশিরভাগ রাজ্য এখনও অভিবাসী শ্রমিকদের পরিচয় যাচাই করছে ও তাদের রেশন কার্ড দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি। কোর্টের একটি বেঞ্চ, যেখানে বিচারপতি সুদংশু ধুলিয়া ও আহসানউদ্দিন আমানুল্লাহ ছিলেন, তাঁরা বলেন, “রেশন কার্ড ইস্যু করতে কত সময় লাগে? এটাই শেষ সুযোগ, আমরা আর কোনও অবকাশ দেব না।”
রেশন কার্ডের গুরুত্ব এবং আদালতের নির্দেশ
রেশন কার্ড (Ration Card) হল সাধারণ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ, বিশেষ করে দরিদ্র পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে রেশন কার্ড বিতরণে অবহেলা মেনে নেওয়া হবে না। যদি রেশন কার্ড প্রদান করা না হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সচিব আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য হবেন কেন রেশন কার্ড ইস্যু করা হয়নি।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, যেসব পরিযায়ী শ্রমিক ইতিমধ্যে ই-শ্রম পোর্টালে নিবন্ধিত, তাদের দ্রুত রেশন কার্ড দিতে হবে। আদালত নভেম্বর মাসের ১৯ তারিখে পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেছে। আর তার আগেই সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে তাদের কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে।
কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলির মধ্যে সমন্বয়ের অভাব
কেন্দ্রের পক্ষে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (ASG) ঐশ্বর্য ভাটি আদালতকে জানিয়েছেন যে রেশন কার্ড বিতরণে রাজ্যগুলির দায়িত্ব ও যাচাই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, “যদি রাজ্যগুলি আমাদের সাহায্য চায়, আমরা সমস্ত সমস্যা সমাধান করে তাদের রেশন কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করব।”
এছাড়াও, আদালত কেন্দ্রকে প্রশ্ন করে বলেন, “দরিদ্র মানুষের প্রতি এত উদাসীনতা কেন? এই বিষয়টি কি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়?” এই মামলাটি সুপ্রিম কোর্ট নিজে থেকেই গ্রহণ করে (“সুয়ো মটো” পিটিশন), যেখানে দেখা গেছে যে ই-শ্রম পোর্টালে নিবন্ধিত অভিবাসী শ্রমিকদের সংখ্যা ও যারা রেশন কার্ড পেয়েছে তাদের মধ্যে একটি বিশাল ফারাক রয়ে গিয়েছে।
পরিযায়ী শ্রমিকদের রেশন কার্ডের বর্তমান পরিস্তিতি
শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ই-শ্রম পোর্টালে নিবন্ধিত প্রায় ২৮৮ মিলিয়ন শ্রমিকের মধ্যে ৮০ মিলিয়ন এখনও রেশন কার্ড পায়নি। আদালত এটি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এই তফাৎ দ্রুত পূরণ করতে হবে ও দরিদ্র মানুষদের খাদ্যসুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের পর রাজ্যগুলির উপর আরও চাপ বাড়বে ও পরিযায়ী শ্রমিকদের রেশন কার্ড পাওয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।