যখন কাশ্মীরের দুয়ারে দুয়ারে উঠছে ‘রালিভ-গালিভ-চালিভ’র শ্লোগান তখন ভয়ে কেঁপে কেঁপে উঠছে কাশ্মিরী পণ্ডিতরা। সালটা তখন ১৯৯০, রাতের অন্ধকারে ভিটেমাটি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে হাজার হাজার হিন্দু পণ্ডিত। সন্ত্রাসবাদীদের নৃশংস হুঙ্কারে ভয়ে কাঠ হয়ে উঠছে হিন্দু পরিবারের আবালবৃদ্ধবনিতা। সময়টা ছিল কাশ্মীরের অরাজকতার, হিন্দুদের ওপর অকাট্য নির্যাতনের।
যার ইতিহাস পড়েছেন তারা জানেন যে, লক্ষ লক্ষ কাশ্মিরী পণ্ডিত বাধ্য হয়েছিলেন তাদের পৈতৃক ভিটেমাটি ছেড়ে আসতে। আর যারা পালাতে পারেননি তারা সন্ত্রাসবাদীদের হাতে পড়ে প্রাণ খুইয়েছেন। আর এই সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। ঐতিহাসিকদের মতে, সংখ্যাটা নাকি লাখ ছাড়িয়েছিল। পৃথিবীর ভূস্বর্গ পরিবর্তিত হয়েছিল নরকে। আর সেই সময়কার বাস্তব পটচিত্রের এক জীবন্ত দলিল ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ (Kashmir Files)।
ইতিহাসবিদরা এই নিয়ে অনেক বইপত্র লিখলেও এতদিন এই কাহিনী নিয়ে চিত্রনাট্য বানানোর সাহস কারো হয়নি। তবে গত বছর কাশ্মীরের এই কালো ইতিহাসের পর্দা উন্মোচন করছেন বলিউড পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। সারাবিশ্বের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন কিভাবে ঋষি কাশ্যপের রাজ্যে অত্যাচার শুরু হয়েছিল। আর এবার সিনেমাটির জন্য এসেছে এক বড় সুখবর।
যদিও সিনেমাটি রিলিজ হওয়ার পরপরই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। তাবড় তাবড় পরিচালক থেকে নেতা মন্ত্রী প্রত্যেকে উঠেপড়ে লাগে ছবিটি পেছনে। এমনকি বাইরের দেশের বিভিন্ন টুলকিটও সক্রিয় হয় সিনেমাটি নিয়ে অপপ্রচার করার জন্য। কিন্তু সত্যি ঘটনা বলেই হয়তো এইসব বাধা বিপত্তি কাটিয়ে উঠতে পেরেছিল ছবিটি। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের দুর্দশার কথা জানার জন্য দেশ-বিদেশের কোটি কোটি মানুষ পৌঁছে গেছিলেন প্রেক্ষাগৃহে।
আর প্রত্যেক সমালোচককে কড়া জবাব দিয়ে বক্স অফিসে সুপারহিট হয় সিনেমাটি। ভারতীয় ইতিহাসের এক অন্যতম কালো অধ্যায়ের ওপর তৈরি হওয়া দ্য কাশ্মীর ফাইলস এবার অস্কারের দৌড়ে রয়েছে। হ্যাঁ, লেটেস্ট রিপোর্ট অনুযায়ী সিনেমাটি ২০২৩ এর অস্কারের জন্য নমিনেশন পেয়েছে। খুব সম্ভবত দুটি বিভাগে নমিনেশন পেয়েছে ছবিটি।
সম্প্রতি, পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রি নিজেই সেই খবর ট্যুইট করে জানিয়েছেন। এর আগেও বহুদেশে সম্প্রচারিত হয়েছে সিনেমাটি, এরপর অস্কার পেলে সেটি বিশ্বের আরো বৃহত্তর অংশের কাছে পৌঁছাবে। প্রসঙ্গত, ‘কাশ্মীর ফাইলস’ ছাড়াও ভারত থেকে অস্কার নমিনেশনের দৌড়ে রয়েছে, ‘কানতারা’, ‘RRR’ এবং ‘গাঙ্গুবাই কাঠিয়াওয়াড়ি’।