গতকাল তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভার স্পিকারকে চিঠি লিখে যোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি থেকে মহুয়া মৈত্রকে সরিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানিয়েছেন। এদিকে, বিদেশ মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটিতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাগরিকা ঘোষ রয়েছেন। ফলে, একই দলের তৃতীয় সদস্য হিসেবে মহুয়াকে এই কমিটিতে নেওয়া হবে কি না, সেই বিষয়ে স্পিকারের কাছ থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
মহুয়া মৈত্রের বিদেশ মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটির সদস্যপদ পাওয়ার আগ্রহের পেছনে রাজনৈতিক কারণে তার অতীতে কিছু জটিলতা রয়েছে। গত বছর তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রকের চেয়ারম্যান নিশিকান্ত দুবের সঙ্গে মহুয়ার তীব্র বিবাদ সামনে আসে। যখন তিনি টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন তোলার অভিযোগে অভিযুক্ত হন। এই ঘটনায়, গত বছরের ৮ ডিসেম্বর সাংসদ পদ হারাতে হয়েছিল মহুয়া মৈত্রকে।
রাজনৈতিক মঞ্চে পরিবর্তনের আসন্ন সম্ভাবনা
নিশিকান্ত আজ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। তবে, তিনি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে ‘সন্ধির বার্তা’ দেওয়ার ইঙ্গিত দেন। তিনি উল্লেখ করেন, “আমরা সরকারকে সম্মিলিতভাবে পরামর্শ দেব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ২০৪৭ সালের উন্নত ভারতের জন্য আমরা চেষ্টা করব। শাসক দল এবং বিরোধী দলের মধ্যে সহযোগিতা প্রয়োজন দেশ গড়তে। অতীতকে ভুলে গিয়ে ভবিষ্যতের কথা ভাবতে হবে।”
এছাড়া, সমাজবাদী পার্টির প্রবীণ নেত্রী জয়া বচ্চনও নিশিকান্ত দুবের নেতৃত্বাধীন কমিটি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে নতুনভাবে শ্রম বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সদস্য হয়েছেন। এতে রাজনৈতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে, তৃণমূল ও সমাজবাদী পার্টির মধ্যে বোঝাপড়ার কৌশল হিসেবে এই রদবদল ঘটেছে।
প্রসঙ্গত, মহুয়া মৈত্রের রাজনৈতিক যাত্রায় এই পরিবর্তনগুলো আগামী দিনে কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে। তৃণমূল কংগ্রেসের এই কৌশলগত পদক্ষেপ কি মহুয়ার জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে, নাকি রাজনৈতিক জটিলতায় নতুন সমস্যার সৃষ্টি করবে, সেদিকেই নজর থাকবে সবার।