বলিউডের তথাকথিত মিস্টার পারফেকশনিস্ট আমির খানের ‘লাল সিং চাড্ডা’ নিয়ে বহু প্রত্যাশা থাকলেও কোনো প্রত্যাশাই পূরণ করতে পারেনি ছবিটি। মুক্তির আগে থেকেই বয়কট ঝড়ের মুখে পড়ে ছবিটি। ফ্লপ তো বটেই, একপ্রকার ডিজাস্টার বলা যায় আমির অভিনীত ‘লাল সিং চাড্ডা’কে। দর্শকরা তো মজা ওড়াচ্ছেনই পাশাপাশি ট্রোল করতে ছাড়েননি পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীও।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বিবেক বলেন, “কিছু মানুষ ভক্তদের দোষ দিচ্ছেন এই ছবি অসফল হওয়ার জন্য। কিন্তু বাকি দর্শকরাও তা দেখতে যাচ্ছে না।” পাশাপাশি আমিরের অতি জনপ্রিয় ছবি ‘দঙ্গল’-এর প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন ‘The Kashmir Files’ খ্যাত এই পরিচালক।
এতো প্রচার, প্রোমোশন, এতো তাবড় তাবড় স্টার কাস্টিংয়ের পরেও ছবিটি এভাবে মুখ থুবড়ে পড়লো কেন? এই প্রসঙ্গে বিবেক অগ্নিহোত্রী বলেছেন, “আমার কাছে খুব যুক্তিযুক্ত একটি প্রশ্ন আছে। আশা করব, আমির তা শুনবে। আমি ঠিক কথাই বলছি। ইন্ডাস্ট্রিতে সবাই বলছে, ভক্তরা (গেরুয়া শিবিরের কর্মী সমর্থক) এই ছবি মুখ থুবড়ে পড়ার পিছনে দায়ী। ভক্তরাই ছবিটি নষ্ট করেছে। কিন্তু জানেন ভারতে নরেন্দ্র মোদি কত ভোট পান? ৪০ শতাংশ। তাহলে বাকি দর্শকরা কোথায় গেল।”
পরিচালকের মতে যে কোনো শিল্পীরই চরম খারাপ পরিস্থিতিতেও কিছু সমর্থক থাকে। কিন্তু যদি সেটাও না থাকে তাহলে মেনে নিতে হবে যে সবটই জালিয়াতি। পরিচালকের কথায়, ” তুমি মানুষকে বোকা বানাচ্ছ। আর কেনই বা ১৫০-২০০ কোটি টাকা দাবি করছ? ছবি বয়কট করলেও কেউ কোনও হিংসা দেখায়নি। দঙ্গল বয়কটের সময়ে হিংসা ছিল। থিয়েটারে ভাঙচুর চলেছিল। পদ্মাবত ছবির সময়ে সিনেমা হলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তাও দুটি ছবিই সুপারডুপার হিট। দঙ্গল-এ আপনি এক বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তার জন্য ওজন বাড়িয়েছিলেন। মানুষ এই পরিশ্রম দেখেছিল। কিন্তু লাল সিং চাড্ডা কেমন? সেটা কেউ জানে না।”
প্রসঙ্গত গত ১১ অগাস্ট রাখি বন্ধন উপলক্ষ্যে রিলিজ হয়েছিলো ‘লাল সিং চাড্ডা’। হলিউড ছব ‘Forrest Gump’-এর অফিশিয়াল রিমেক হলো ‘লাল সিং চাড্ডা’। এরকম একটা কাল্ট ক্লাসিক ছবির অফিশিয়াল রিমেক তৈরি করার জন্য কম কাঠ খড় পোড়াতে হয়নি আমিরকে। পাছে ছবিতে কোনোরকম কোনো খুঁত থেকে যায় তার জন্য প্রায় ২০০ দিন ধরে চলেছিলো শুটিং। যদিও সেই সমস্ত পরিশ্রমই আজ ব্যর্থ।
‘বয়কট বলিউড’ ট্রেন্ডের দরুন হলেই পা রাখেনি মানুষ। গুটি কয়েক মানুষ হলে গেলেও বেশিরভাগ মানুষই আমিরের অভিনয়ের সমালোচনা করেছে। কিছু মানুষ তো এটাও বলেছে যে, ছবিতে যা দেখানো হয়েছে তার সাথে ভারতীয় আর্মির দূর দূরান্ত পর্যন্ত কোনো সম্পর্ক নেই। ছবি ফ্লপ হওয়ার পেছনে বয়কট ট্রেন্ডের অবদান তো রয়েইছে তার সাথে আমিরের দূর্বল অভিনয়ও কম কিছু নয়।