নিউজশর্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গে শাসনভার পাবার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়র(Mamata Banerjee) সরকার পরিচিত প্রকল্পর সরকার নামে। রাজ্যজুড়ে সারাবছর চালানো হয় একাধিক সরকারি প্রকল্প। সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে নেওয়া হয় নানান পদক্ষেপ। এর মধ্যে কিছু প্রকল্প থাকে স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত আবার কিছু থাকে শিক্ষা সংক্রান্ত। কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, লক্ষ্মীর ভান্ডার নামের এই প্রকল্পগুলি এই মুহূর্তে যথেষ্ট জনপ্রিয় রাজ্যে। অন্যান্য দিক থেকে সমালোচিত হলেও, এই প্রকল্প চালানো বিষয়েই বারংবার প্রশংসিত হয়েছে এই সরকার। আর এবারে আরও এক নতুন প্রকল্প এনে ফের একবার চমক দিল রাজ্য সরকার। আসুন জেনে নিই এই বিশেষ প্রকল্প সম্পর্কে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়র মস্তিষ্কপ্রসূত বিশেষ এই প্রকল্পের নাম ‘নির্মান কর্মী প্রকল্প’। অনেকের কাছে এটিই আবার পরিচিত ‘লেবার কার্ড’ নামে। নাম শুনলেই বুঝতে পারবেন এটি মূলত নির্মাণ কাজের কর্মীদের জন্য। অর্থাৎ মূলত শ্রমিকদের জন্যই এই সুবিধে। তবে এই প্রকল্পে আবেদন করতে গেলেই মানতে হবে নির্দিষ্ট কয়েকটি নিয়ম ও শর্ত, আসুন জেনে নিই সেই সম্পর্কে।
প্রথমেই এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে আপনাকে হতে হবে নির্মাণ শ্রমিক। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে আপনাকে। এরপর বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, আপনাকে বিগত বছরে অন্ততপক্ষে ৯০ দিন কাজ করে থাকতে হবে, আপনি নির্মাণ কর্মী অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মী হলে পাবেন এই প্রকল্পের সুবিধা। এছাড়াও রাস্তা, রেল, বাড়িঘর সহ যে কোন ধরনের নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত অথবা মেরামতির সঙ্গে যুক্ত কর্মীরাও এই প্রকল্পে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। এই প্রকল্পের মধ্য দিয়ে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যে সকল সুবিধা দেওয়া হচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এবারে এতে আবেদন করতে গেলে আপনাকে প্রথমেই যেতে হবেhttps://edistrict.wb.gov.in/PACE/login.do অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে। এরপর এতে লগইন করতে হবে। এরপর সেখানে প্রয়োজনীয় সব dovumenets নথিভুক্ত করলেই কাজ শেষ।
এই প্রকল্পের মাধ্যমেই আপনি পাবেন একাধিক সুবিধে। এক নজরে জেনে নিন সেই সকল সুবিধে –
১) দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কর্মীদের ১০০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয় চিকিৎসার জন্য।
২) দেহের কোন অঙ্গে অস্ত্রোপচারের করা হলে তার জন্য ৩০০০০ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়ে থাকে।
৩) দুর্ঘটনার কারণে কোন কর্মী যদি পঙ্গু হয়ে যান তাহলে তাকে আর্থিক সহযোগিতা হিসেবে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
৪) যক্ষা রোগে আক্রান্ত হলে আর্থিক সাহায্য হিসেবে দেওয়া হয় তিন হাজার টাকা।
৫) নির্মাণ কর্মীর পরিবারের কারো চিকিৎসার প্রয়োজন হলে সেক্ষেত্রেও বছরে সর্বোচ্চ ১০০০০ টাকা দেওয়া হয়।
৬) প্রকল্পের আওতায় থাকা কোন নির্মাণ কর্মীর স্বাভাবিক মৃত্যু হলে তার পরিবারকে তিন হাজার টাকা দেওয়া হয় এবং যদি নির্মাণ কাজ করাকালীন মৃত্যু হয় তাহলে তার পরিবারকে দেওয়া হয় এক লক্ষ টাকা।
৭) নির্মাণ কর্মীর বয়স ৬০ বছর পার হয়ে গেলে তাকে পেনশন হিসাবে মাসে দেওয়া হয় ৮৭০ টাকা এবং তার মৃত্যু হলে তার স্ত্রী প্রতিমাসে এর অর্ধেক পেনশন পাবেন।
৮) এছাড়াও কাজের জন্য যন্ত্রপাতি কেনার ক্ষেত্রে এককালীন এক হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়।
৯) নির্মাণ কর্মীর চশমার প্রয়োজন হলে তাকে ৫০০ টাকা দেওয়া হয়
১০) মহিলা নির্মাণ কর্মীদের গর্ববতী অবস্থায় ছয় হাজার টাকা দেওয়া হয় এবং যদি গর্ভপাতের প্রয়োজন হয় তাহলেও চার হাজার টাকা দেওয়া হয়।
১১) নির্মাণ কর্মীদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য ১৫০০০ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
১২) কোন নির্মাণ কর্মী বাড়ি তৈরি করতে চাইলে তাকে মাত্র ৫% সুদে ৫০ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়।
এছাড়াও সাইকেল কেনার জন্য ৫০০০ টাকা, নির্মাণ কর্মী মেয়েদের বিয়ের জন্য ১০ হাজার টাকা, নির্মাণ কর্মীর শেষকৃত্য সম্পন্নের জন্য তিন হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়ে থাকে।