Puri Jagannath Mandir Ratna Bhander opened after 46 years whats inside revealed

কী কী আছে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভান্ডারে? ৪৬ বছর পর গুপ্তকক্ষের দরজা খুলতেই ফাঁস রহস্য

নিউজশর্ট ডেস্কঃ অবশেষে ৪৬ বছর পর খুলে গেল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডারের (Jagannath Temple Ratna Bhandar) দরজা। আদালতের নির্দেশ মেনেই এই দরজা খোলা হয়েছ। নির্বাচনী প্রচারে বিজেপির তরফে ক্ষমতায় এলেই রত্ন ভাণ্ডার খোলার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। সেই মতোই পরবর্তীতে আদালতের আদেশ অনুযায়ী খোলা হল এই দরজা। এর আগে ১৯৭৮ সালে শেষবার খোলা হয়েছিল সেই দরজা।

জগন্নাথ মন্দিরের এই দরজা খোলা হলে ভাল হবে না বলেই অনেকেই মন্তব্য করেছেন। অনেকেই বলেছেন এই রত্নভাণ্ডারের দরজা খুললে বিপদ নেমে আসতে পারে। ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন জানিয়েছেন, রত্নভাণ্ডারের মেরামতির জন্য খোলা হচ্ছে দরজা। সেখানে খতিয়ে দেখা হবে কোন কোন গয়না রয়েছে। তার হিসেব করা হবে। মেরামত করা হবে রত্নভাণ্ডারের ভেতরের বিভিন্ন জায়গা। কত অলঙ্কার এবং রত্ন সেখানে রয়েছে সেটাও খতিয়ে দেখে নথিভুক্ত করা হবে।

কখন এবং কারা খোলেন এই দরজা?

জানা গিয়েছে, ১৪ই জুলাই তথা রবিবার দুপুর ঠিক ১টা বেজে ২৮ মিনিটে রত্ন ভাণ্ডার খোলার সময় চূড়ান্ত করা হয়েছিল । শ্রী জগন্নাথ টেম্পল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মুখ্য প্রশাসক অরবিন্দ কুমার পাড়িই এই সময় নির্ধারণ করেছিলেন।ওড়িশা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ রথের নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল গোটা প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধানে ছিল। এদিন যারা আজ রত্ন ভাণ্ডারে প্রবেশ করেছিলেন তারা সকলেই নিরামিষ খাবার খেয়েছিলেন। রত্ন ভাণ্ডারে প্রবেশের আগে লোকনাথ দেবের পূজাও করেছিলেন তাঁরা।

Puri Jagannath Temple

আরও পড়ুনঃ রথযাত্রায় কেন খাওয়া হয় পাঁপড়-জিলিপি? কারণ ৯০% লোকের কাছে আজও অজানা

কি আছে মন্দিরের রত্ন ভাণ্ডারে?

পুরীর মন্দিরে রত্ন ভাণ্ডারের দুটি অংশ রয়েছে। বাইরের অংশে থাকা দেব-দেবীর সোনা-রুপো, মণি-মুক্তের গহনা বিশেষ বাক্সবন্দি করে স্ট্রং রুমে রাখা হয়েছে। তবে অন্দরের অংশের দরজা খুলতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হয়। মন্দিরের সেবাইতদের কাছ থেকে একটি চাবি মিলছিল৷ কিন্তু, সেই চাবি দিয়ে দরজা খোলেনি। এরপরেই তালা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রত্ন ভাণ্ডারের অন্দরের অংশের পরীক্ষা করে দেখবে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া। ভিতরের অংশ মেরামতও করা হবে বলে জানা গিয়েছে৷

কথিত আছে, পুরীর রত্ন ভাণ্ডারের ভিতরের অংশে বাস করেন নাগরাজ, জগন্নাথ-বলরাম ও সুভদ্রার সম্পত্তি পাহারা দেয় সাপেরা৷ তাই রত্ন ভাণ্ডারের ভিতরের অংশের দরজা খোলার আগে সাপ বিশেষজ্ঞদের৷ তবে এখনও সাপ উদ্ধারের কথা জানা যায়নি। তবে প্রচুর বাদুড় রত্ন ভাণ্ডারের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে ৷ রাজ্য সরকার রত্ন ভাণ্ডারে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্রের একটি ডিজিটাল ক্যাটালগ প্রস্তুত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷ সেখানে থাকা রত্নের ওজন এবং কীভাবে সেগুলি তৈরি করা হয়েছে এর মতো বিশদ বিবরণ থাকবে।

প্রসঙ্গত, ৪৬ বছর আগে খোলা হয়েছিল এই রত্ন ভাণ্ডারের দরজা। সেই তথ্য অনুযায়ী, পুরীতে জগন্নাথ দেবের রত্ন ভাণ্ডারে মোট ৪৫৪টি সোনার গয়না, যার ওজন আনুমানিক ১২৮৩৮ ভরি এবং২৯৩টি রুপোর গহনা রয়েছে, যার ওজন ২২১৫৩ ভরি। এরমধ্যে রত্ন ভাণ্ডারের বাইরের যে অংশ রয়েছে, তাতে রাখা আছে জগন্নাথদেবের মণি-মুক্তো জড়ানো সাজসজ্জা।

এছাড়াও ৭৯টি সোনার গহনা, ৩৯টি রুপোর গহনা আছে। সঙ্গে রয়েছে নিত্য ব্যবহারের আরও সোনাদানা। ব্রক্ষ্মজ্যোতি হিরে, বলরামের নীলা, সুভদ্রার মণিমুক্তোও রয়েছে। ভিতরের ভাণ্ডারে কী কী রয়েছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে ৩৫০-রও বেশি সোনার গয়না ও ২৩০টিরও বেশি রুপোর গহনা আছে বলে জানা যায়।

Avatar

Koushik Dutta

X