ঠোঁটকাটা স্বভাব বলুন বা অহঙ্কার, রাজ কুমারের(Raaj Kumar) মধ্যে দুটোই ছিল ভরপুর। আসলে পুলিশের চাকরী ছেড়ে এসেছিলেন অভিনয় করতে। আর সেই কারণে নামী পরিচালক থেকে প্রযোজক, কাওকেই সেভাবে রেয়াত করতেন না তিনি। কিন্তু তিনি জব্দ হয়েছিলেন একমাত্র মিঠুন চক্রবর্তীর (Mithun Chakraborty) কাছে।
আশির দশকের সুপারস্টার ছিলেন রাজ কুমার। একজন নায়ক হওয়ার সমস্ত গুণই মজুত ছিল তার মধ্যূ। তবে তার সাথে ছিল ভরপুর দম্ভ। সেই দম্ভ এতটাই যে, বলিউডের তাবড় তাবড় পরিচালক থেকে প্রযোজক কাউকেই কটুক্তি করার আগে দ্বিতীয়বার ভাবতেন না। তবে ইট ছুঁড়লে পাটকেল তো খেতেই হয়। সেটাই হয়েছিল মিঠুন চক্রবর্তীর বেলায়।
১৯৮৯ সালে ‘গলিয়ো কা বাদশা’ ছবিতে মুখ্য চরিত্রে দেখা গিয়েছিল রাজ কুমারকে। সঙ্গে ছিলেন হেমা মালিনী, পুনম ঢিলোঁ, স্মিতা পাটিলের মতো একাধিক নায়িকা। এই ছবিতেই একটি ছোট ভূমিকায় মিঠুনকে কাস্ট করা হয়েছিল। ডিস্কো ডান্সারের জনপ্রিয়তা সবে শুরু হয়েছে তখন। দীর্ঘ ৭ বছর স্ট্রাগলের পর সফলতা ডানা মেলতে শুরু করেছে।
এমতাবস্থায় ছবির স্টারকাস্ট দেখে মিঠুন ছোট চরিত্রের জন্যেই রাজি হয়ে যান। শুরু করে দেন শুটিং। তবে রাজ কুমার ফ্লোরে আসা মাত্রই শুটিং বন্ধ করে দেন। মেজাজ দেখিয়ে বলেন, চরিত্র যত ছোটই হোক না কেন, কোনো নামজাদা অভিনেতাকে নেওয়া উচিত ছিল। এরকম একজন স্ট্রাগলারকে নেওয়া উচিত হয়নি।
এই কথা মহাগুরুর কানে যেতে স্বাভাবিক ভাবেই আহত হন তিনি। সাথে সাথেই মিঠুন বলেন, এভাবে তরুণ অভিনেতাদের অপমান করলে আর কোনো তরুণ অভিনেতাই রাজি হবেনা কাজ করতে। মিঠুনের কথার উত্তরে রাজ কুমার কটূক্তি করে বলেন, মিঠুন চিরদিন স্ট্রাগলই করলেও নায়ক হতে পারবেন না। কিন্তু তারপরই গল্পে বিরাট টুইস্ট আসে।
ছবির পোস্টার লঞ্চ হলে দেখা যায় রাজ কুমারের ছবির চেয়ে মিঠুনের ছবি বড়। এটাই একমাত্র ছবি যার পোস্টারে নায়কের তুলনায় ছোট চরিত্রের অভিনেতার ছবি বড় ছিল। ফল স্বরূপ, ছবি ফ্লপ হয়েছিল বটে তবে যে কয়জন দর্শক হলে এসেছিল তারা মিঠুনের জন্যেই এসেছিল। মিঠুনের কেরিয়ারের কথা আর নাই বা বললাম। আজ রাজ কুমারকে অনেকেই মনে রাখেননি, কিন্তু মিঠুন চক্রবর্তী সারা ভারতের ‘মহাগুরু’।