পার্থ মান্নাঃ কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন ডিসেম্বরের ২০ তারিখ থেকেই আবাস যোজনায় নাম নথিভুক্তদের জন্য টাকা দেওয়ার পক্রিয়া শুরু হবে। তবে টাকা দেওয়া শুরুর আগে সমীক্ষা শুরু হতেই শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। কেন? কারণ দেখা যাচ্ছে, প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ লোকের নাম এই তালিকা থেকে বাদ পড়ে গিয়েছে। তাছাড়া অনেকেই দুর্নীতির অভিযোগও তুলেছেন।
বাতিল হচ্ছে বাংলা আবাস যোজনা তালিকার নাম
এবছর প্রায় ১৬ লক্ষ মানুষ আবাস যোজনার জন্য আবেদন করেছিলেন। তাদের জন্য টাকা দেওয়ার কাজ শুরু হওয়ার কথা ২০ ডিসেম্বর থেকে। এর আগে সমীক্ষা করে নাম ফাইনাল করার জন্য ১৩ই ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় ঘোষণা করা হয়েছিল। তাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা শুরু করা হয়েছে। সেখানেই উঠে আসছে আবেদনের সাথে গড়মিলের তথ্য। যার জেরে অনেক নাম বাতিল হয়েছে।
নাম বাতিল হওয়ার পিছনে মূলত ১১টি কারণ উঠে আসছে বলে মনে করা হচ্ছে। কোনসেগুলি কি কি? চলুন দেখে নেওয়া যাক সেই কারণগুলির তালিকাঃ
১। আবেদনকারী ব্যক্তির নামে যদি পাকা বাড়ি থেকে তাহলে কোনো টাকা পাওয়া যাবে না।
২। আবেদনকারীর যদি কোনো তিন চাকা বা চার চাকা গাড়ি থাকে তাহলেও আবাস যোজনায় বাড়ি পাওয়া যাবে না।
৩। কৃষিকাজের জন্য ব্যবহৃত তিন চাকা বা চার চাকার গাড়ির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে ও আবাস যোজনা থেকে নাম বাতিল করে দেওয়া হবে।
৪। আবেদনকারীর পরিবারে যদি কেউ সরকারি চাকরি করে তাহলে তাদের আবাস যোজনা প্রকল্পের থেকে বাতিল করে দেওয়া হবে।
৫। পরিবারের কোনো সদস্যের আয় যদি মাসে ১৫,০০০ টাকার বেশি হয় তাহলেও আবেদন বাতিল করে দেওয়া হবে।
৬। যদি আবেদনকারী একজন ট্যাক্স পেয়ার বা আয়কর দাতা হয়ে থাকেন তাহলেও আবাস যোজনা প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যাবে না।
৭। যদি আবেদনকারীকে বছরে ১৫,০০০ টাকার বেশি প্রফেশনার ট্যাক্স দিতে হয় তাহলে তাকে বাতিল বলে গণ্য করা হবে।
৮। যে আবেদন করছে তাঁর নাম যদি আড়াই একর বা তার থেকে বেশি কৃষি জমি থাকে তাহলে নাম বাতিল করা হবে।
৯। চাষযোগ্য নয় এমন জমি যদি ৫ একর বা তার বেশি হয় তাহলেও আবাস যোজনায় কোনো টাকা পাওয়া যাবে না।
১ ০। অন্য কোনো আবাস যোজনায় যদি একবার টাকা পেয়ে থাকে থালে আর আবেদন করা যাবে না।
১ ১। যদি আবেদনকারীর পরিবারের কোনো সদস্য অকৃষিজ সংস্থার সাথে যুক্তি থাকেন যেটা সরকারের কাছে রেজিস্টার্ড তাহলেও এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যাবে না।
প্রসঙ্গত, প্রথমে আবাস যোজনার সমীক্ষার জন্য শেষ তারিখ ছিল ৩০ শে অক্টোবর। তবে পরে সেটা বাড়িয়ে ১৫ই অক্টোবর করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে সমীক্ষার পর জানা যাচ্ছে প্রায় ৪ লক্ষ ১৮ হাজারেরও বেশি নাম বাতিল হয়েছে মূলত আগে থেকেই পাকা বাড়ি থাকার জন্য। এছাড়াও উপরিউক্ত কারণের জেরে নাম বাতিল হওয়াতে ক্ষুদ্ধ হয়েছেন আমজনতা। যার জেরে বেশ কিছু জায়গায় পুনরায় সমীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।