ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পাচারের ঘটনা নিত্যদিনের একটি সমস্যা। সীমান্ত এলাকায় পাচারের বিবিধতা এতটাই বিস্তৃত যে বিএসএফকে সর্বদা তৎপর থাকতে হয়। সম্প্রতি নদীয়া জেলার বানপুর সীমান্তে বিএসএফ জওয়ানদের টহলের সময় এক অভিনব ঘটনা ঘটে। কাঁটাতারের উপর দিয়ে পাচারের সময় ধরা পড়ে একটি বিচিত্র চারপেয়ে প্রাণী, যা ভারতের মাটিতে পাচার করার চেষ্টা হচ্ছিল। তবে BSF এর তৎপরতায় সেটা আর সফল হয়নি।
নদীয়ার বানপুর সীমান্তে পশু উদ্ধার
বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি এনকে পাণ্ডে জানাচ্ছেন, বুধবার বানপুর সীমান্তে জওয়ানরা কাঁটাতারের বেড়ার কাছে অস্বাভাবিক গতিবিধি লক্ষ্য করেন তিনি। পাচারকারীরা মই দিয়ে কোনো একটি প্রাণী সীমান্তের এপারে পাচার করার চেষ্টা করছিলেন। ভারতের দিকে প্রাণীটিকে নেওয়ার জন্যও চারজন রীতিমত অপেক্ষায় ছিলেন। এএপির বিএসএফ জওয়ানরা তৎক্ষণাৎ শূন্যে গুলি চালালে পাচারকারীরা সব কিছু ফেলে দৌড় দিতে শুরু করে। পাচারকারীরা পালিয়ে যাওয়ার পর বিএসএফ জওয়ানরা এই প্রাণীটিকে উদ্ধার করেন। উঠের মত দেখতে এই চারপেয়ে প্রাণীটি হল একটি আলপাকা। পরে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে প্রাণীটিকে কৃষ্ণনগরের বন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
নদীয়ার সীমান্ত এলাকায় উদ্ধার আলপাকা
আলপাকা মূলত দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ পর্বতের একটি প্রাণী। এই প্রাণীটি উট গোত্রীয় হলেও আকারে ছোট ও প্রধানত লোমের জন্য বিখ্যাত। বাদামি রঙের উদ্ধার হওয়া আলপাকাটি ‘হুয়াকায়া’ প্রজাতির বলে মনে করা হচ্ছে। যার লোম অত্যন্ত মূল্যবান ও বিভিন্ন দেশে পোশাক তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়। নদীয়ার এই উদ্ধারকৃত আলপাকাটি হয়তো পাচারের মাধ্যমে এর লোম বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, নদীয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রাণী পাচারের ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু আলপাকার মতো বিরল প্রাণী উদ্ধার সত্যিই চমকে দেওয়ার মত। বিএসএফের এ ধরনের তৎপরতা এবং সাফল্য সীমান্তে পাচার রোধে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। বর্তমানে এই অঞ্চলে পশু পাচার বন্ধ করতে বিএসএফ ও বন দফতর আরও কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। তাই আগামী দিনে এই ধরণের ঘটনা যেমন প্রতিরোধ করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।