নিউজশর্ট ডেস্কঃ বাংলা টেলিভিশনের কুকিং শোয়ের (Cooking Show) জনপ্রিয় একজন সঞ্চালিকা সুদীপা চট্টোপাধ্যায় (Sudipa Chatterjee)। সম্প্রতি কলকাতা থেকে ওপর বাংলায় পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশের একটি রান্নার শো ‘রাধুনী এপার ওপারের রান্না’তে হাজির হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে ঈদ স্পেশাল পর্ব সম্প্রচারিত হওয়ার পরেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে অভিনেত্রীকে।
‘রাধুনী এপার ওপারের রান্না’র সঞ্চালিকা ছিলেন তারিন জাহান। শোয়ের শুরুতেই তিনি ভুল করে বলে ফেলেন যে, ‘সুদীপা আজ তোমাকে আমি গরুর মাংস রান্না করে খাওয়াব’। একজন হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে কুকিং শোয়ে ডেকে নিয়ে যাওয়ার পর তাকে গরুর মাংস খাওয়ানোর কথা বলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে বাংলাদেশের ঐ কুকিং শোটিকে। তবে এক্ষেত্রে সুদীপাও ছাড়া পাননি ক্ষুদ্ধ নেটিজেনদের থেকে।
সোশ্যাল মিডিয়াতে নেটিজেনদের কেউ লিখেছেন, ‘ওঁর বাড়িতে আবার নাকি মা দুর্গার পুজো হয়। ছিঃ।’ তো আরেকজন কমেন্ট করেছেন ‘এই মহিলা এখন গোরুর মাংস প্রোমোট করছে। আর কত নামবে নীচে।’ আবার আরেকজন লিখেছেন, ‘এই মহিলাকে এর আগে তুলসী পাতা দিয়ে খাসির মাংস রান্না করতেও দেখেছিলাম।’
আরও পড়ুনঃ ‘কে বুঝবে তোমার মত করে আমায়?’ বিয়ের মাস ঘুরতেই মাতৃহারা ‘ফুলকি’ অভিনেত্রী কৌশাম্বী
ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই নানা কটাক্ষ ধেয়ে আসে। এমনকি অভিনেত্রীকে ‘জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার হুমকি’ পর্যন্ত দেওয়া হয়। তাঁর ৫ বছরের ছেলে থেকে স্বর্গীয় মা’কে নিয়েও চলেছে ট্রোলিং। তবে এতকিছু হওয়ার পর মুখ খুলেছেন অভিনেত্রী সুদীপা চট্টোপাধ্যায়। সম্প্রতি হিন্দুস্থান টাইমসের কাছে তিনি এই ঘটনার জন্য সকলের থেকে ক্ষমা চেয়েছেন।
এছাড়াও সনাতন টিভির তরফ থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রুমাল দিয়ে চোখের জল মুছতে মুছতে অভিনেত্রী বলছেন, ‘এটা যখন আপনাদের মনে এতটাই আঘাত দিয়েছে, নিশ্চই খারাপ লেগেছে কারোর কারোর। তাঁদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী, আপনাদের আবেগে আঘাত দেওয়া জন্য। আশা করি আগামী দিনে আমি এটা মনে রেখে, মাথায় রেখে চলবে। এমন কোনো ঘটনা ঘটলে অনেক বেশি সাবধান হব। তবে আমার না সত্যিই মাথায় আসেনি এটা হতে পারে!’
এদিন সুদীপা আরও বলেন, ‘অন্যের ধর্মাচরণে বাঁধা দেওয়ার অথিকার আমার নেই। যেখানে আমি একটা অন্য দেশে দাঁড়িয়ে। সেখানে তাদের জাতীয় খাবারের মধ্যে গরুর মাংস পড়ে। সেখানে দাঁড়িয়ে আমি বলতে পারি না যে তারিন তুমি এটা রান্না কোরো না। কারোর ধর্মীয় আচরণে বাঁধা দেওয়ার অধিকার অন্য কোনও ধর্মের মানুষের আছে বলে আমার জানা নেই। আমরা ছোটবেলা থেকেই এই শিক্ষায় বড় হয়েছি যে, আমরা একই বৃন্তে দুইটি কুসুম হিন্দু-মুসুলমান। মুসলিম তার নয়নমণি হিন্দি তাহার প্রাণ’।