নিউজশর্ট ডেস্কঃ দেশ জুড়ে সকল ঋণ গ্রাহকের জন্য ঘোষিত হল এক দারুন সুখবর। চলতি বছরেই ঋণ ফেরত দেওয়া প্রসঙ্গে এক নয়া নির্দেশিকা আনতে চলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)। প্রতিটি মানুষই তাদের নিজের জীবনের স্বপ্ন পূরণের জন্য লোন (Loan) নিয়ে থাকেন। চাকরি জীবনে পা রাখার পরই অনেকে বাড়ি-গাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত নেন। সেই ক্ষেত্রে ঋণ নিয়ে থাকেন অনেকেই।
তবে ব্যাংকের ঋণ যে শুধু বড় অঙ্কের টাকার ক্ষেত্রেই হয়, এমনটা নয়। অল্প টাকার জিনিস যেমন মোবাইল ফোন, ফ্রিজ, এসি এমন আরো নানা রকমের জিনিস কিনতে EMI এরই সুবিধা গ্রহণ করেন অনেকেই। আর এই পদ্ধতি অবলম্বন করে এখন তরুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা বেশি জিনিস কিনে থাকে। এই EMI পদ্ধতিতে অল্প কিছু ডাউন পেমেন্ট করে আর প্রতিমাসে টাকা ফেরত দিয়ে জিনিস কেনা যায়। তবে এই লোন পরিশোধ করার বেশ কিছু নিয়ম আছে সে গুলো মেনে চলতে হয় লোন গ্রাহকদের, আজ সেই সম্পর্কেই বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
কি কি ঋণ পরিষেবা আছে?
লোন নেওয়া যতটা সহজ হয়, পরিশোধ করতে ঠিক ততটাই চাপ আসে। এক্ষেত্রে কিছু কিছু ব্যাঙ্কের বিশেষ কিছু নিয়ম থাকে। বর্তমানে সাধারণত গৃহঋণ,ব্যক্তিগত ঋণ, গাড়ি ঋণ এই সবের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি লোন নেওয়া হয়ে থাকে। তাই এই সব লোন নেওয়ার আগে সব নথি যাচাই করে তারপরে লোন নেওয়া উচিত।
আরও পড়ুনঃ পোস্ট অফিস না SBI? ফিক্সড ডিপোজিট বেশি সুদ দিচ্ছে কে? বিনিয়োগের আগে অবশ্যই দেখুন
ঋণগ্রহীতা মৃত্যুর পর ঋণ পরিশোধ করবে কে?
লোন নেওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায় মধ্যবিত্ত পরিবার গুলোতে। বেশি দামি জিনিস কেনার ইচ্ছে থাকে কিন্তু সামর্থ্য না থাকার কারনে অথবা কোন ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য লোন নিতে হয়। প্রায় সব মধ্যবিত্ত পরিবারে এক জন গৃহ কর্তা থাকে। তার উপরই সংসারের যাবতীয় দ্বায়িত্ব থাকে।তাই লোন নেওয়ার প্রয়োজন হলে তাকেই লোন নেওয়ার দ্বায়িত্ব নিতে হয়।
এবার যদি কোনো গৃহ কর্তা দীর্ঘমেয়াদি লোন নেবার পরে লোন পুরোপুরি পরিশোধ করার আগেই মৃত্যু হয় তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই লোন পরিশোধ করার দ্বায়িত্ব এসে পরে পরিবারের কাঁধ। আর্থিক অসহায়তা এই সব পরিস্থিতিতে বড় সমস্যার কারণ সৃষ্টি করতে পারে। তবে প্রতিটা ঋণ ফেরতের নিয়ম কিন্তু এক নয়। বিভিন্ন লোনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে। তবে এমন কিছু লোন আছে, যা গ্রহণ করার পর ঋণগ্রহীতা মারা গেলে তা শোধ করতে হয় না পরিবারকে। আসুন জেনে নি সেই রিনের নিয়ম গুলি।
হোম লোন
মূল্যবৃদ্ধির বাজারে সব জিনিসের যেমন দাম বাড়ছে তেমন বাড়ি তৈরির ইট, সিমেন্ট, রড, বালি সব জিনিসেরই দাম বেড়েছে। যার ফলে নিজেদের সঞ্চিত অর্থ থেকে বাড়ি তৈরি করা খুবই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারন মানুষের ক্ষেত্রে। তাই বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে গৃহ ঋণ নেওয়া খুব স্বাভাবিক বিষয়। নিয়ম অনুযায়ী, গৃহ ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে বন্ধক রাখতে হয় বাড়ি। বাড়ির যাবতীয় নথি ব্যাংক এর কাছে বন্ধক দিয়ে তারপরেই লোন (Home Loan) নেওয়া যায়। আর এই পরিস্থিতিতে যদি Loan Repayment করার আগেই যদি সেই ব্যাক্তি মারা যান তাহলে লোন পরিশোধের পুরো দ্বায়িত্ব এসে পরে পরিবারের উপরে।
লোন পরিশোধ করার মত পরিবারে যদি তেমন কেউ না থাকে তাহলে বাড়িটিকে বিক্রি করে লোন পরিশোধ করতে হয়। আর যদি পরিবার তা না করে তাহলে ব্যাংক বাড়িটিকে নিলামে তুলে দেয় এবং লোন পরিশোধ করে। তবে এই পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য নতুন একটি প্রকল্প নিয়ে এসেছে ব্যাংক। বর্তমানে হোম লোনের উপরে বীমা অফার করা হয়। ঋণ গ্রহীতার মৃত্যুর পর এই বীমার মাধ্যমেই Loan Repayment করা যায়। এর ফলে পরিবরের সদস্যদের উপরে চাপ বৃদ্ধি পায় না।
গাড়ি ঋণ ও ব্যক্তিগত ঋণ
গাড়ির লোন শোধ না করতে পারলে ঋণ গ্রহীতার বাড়ির লোকের উপরে চাপ পরে Loan Repayment করার ক্ষেত্রে। যদি পরিবারের তেমন কেউ লোন পরিশোধ করতে না পারে তাহলে ব্যাংক গাড়ি বাজেয়াপ্ত করতে পারে। আর একবার বাজেয়াপ্ত হলে সেই গাড়ি আবার ফেরত পেতে খুবই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
তবে ব্যাক্তিগত ঋণের ক্ষেত্রে এতো নিয়ম নয়। পার্সোনাল ও ক্রেডিট লোনের ক্ষেত্রে ঋণ গ্রহীতার মৃত্যু হলে লোনের বিষয়টি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের কোনো ভুমিকা থাকে না। ব্যাংক কারো কাছে লোন Loan Repayment করার আর্জি জানাতে পারে না। তাই এই সকল নিয়ম সম্পর্কে গ্রাহকদের আগের থেকে জেনে নেওয়া উচিত যার ফলে তাদের অনেক সুবিধা হয় ।