নিউজশর্ট ডেস্কঃ টানা দুই মাস ধরে প্রাক বিবাহ পর্ব চলার পর অবশেষে ধনকুবের মুকেশ-নীতা আম্বানির (Mukesh Ambani Son) কনিষ্ঠ পুত্র অনন্ত আম্বানি (Anant Ambani) ১২ জুলাই সাত পাকে বাঁধা পরেছেন ফার্মা টাইকুন বীরেন ও শায়লা মার্চেন্টের কন্যা রাধিকা মার্চেন্টের (Radhika Merchant) সাথে। আম্বানি পরিবারের ছোট পুত্রের বিয়েতে বিন্দুমাত্র অভাব ছিল না রাজকীয়তার। শুধু বিয়ে নয়, প্রাক বিবাহেও ছিল সেই রাজকীয়তার ছোঁয়া। জামনগরে প্রথম প্রাক-বিবাহ উদ্যাপনে তার আভাস পাওয়া গিয়েছিল। ইটালির বিলাসবহুল ক্রুজে দ্বিতীয় উদ্যাপনও ছিল বিলাসিতায় মোড়া। সেই নিরিখে বিবাহে যে রাজকিয়তা থাকবে তা বলাই বাহুল্য।
সূত্রের খবর, ছোট ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ করেছেন মুকেশ অম্বানী। এবং যা নাকি অম্বানীদের বার্ষিক আয়ের মাত্র ০.৫ শতাংশ। মেয়ে ইশার বিয়েতেও এত টাকা খরচ করেননি মুকেশ-নীতা। ইশার বিয়েতে ৭০০-৮০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। তবে শুধু মাত্র আম্বানি নয়, এর আগেও একাধিক বিয়ে হয়েছে যার জন্য খরচ হয়েছে প্রায় কোটি কোটি টাকা। কারা সেই দম্পতি? এই প্রতিবেদনে তুলে ধরব সেই তালিকা।
যুবরাজ চার্লস এবং যুবরানি ডায়ানার বিয়েঃ ১৯৮১ সালে ইংল্যান্ডের তৎকালীন যুবরাজ চার্লস এবং যুবরানি ডায়ানার বিয়ে, গত কয়েক দশকের সবচেয়ে আড়ম্বরপূর্ণ বলে মনে করা হয়। রাজপরিবারের বিয়ে। তাই সর্বত্রই রাজকীয়তায় মোড়া। চার্লস এবং ডায়ানার বিয়ের অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৩০০০ অতিথি। তবে বিয়ের অনুষ্ঠান টিভিতে সম্প্রচারিত হওয়ায় ৭৪টি দেশের প্রায় ৭৫ কোটি নাগরিক সাক্ষী থাকতে পেরেছেন ঐতিহাসিক মুহূর্তের। সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল গির্জায় বিয়ে হয়েছিল চার্লস এবং ডায়ানার। বিয়েতে ডায়ানা যে গাউন পরেছিলেন, তা পুরোটাই মুক্তোর তৈরি। প্রায় ১০ হাজার মুক্তো বসানো ছিল গাউনে। বিয়েতে প্রায় ২৭টি কেক কাটা হয়েছিল। রাজপরিবারের বিয়ের খরচ নির্দিষ্ট অঙ্কে বাঁধা মুশকিল। তাই নির্দিষ্ট অঙ্কে বিয়ের খরচ প্রকাশ্যে আসেনি।
সাহারা মালিকের দুই ছেলের বিয়েঃ একই মণ্ডপে দুই ছেলের বিয়ের আয়োজন করেছিলেন সাহারা গ্রুপের কর্ণধার সুব্রত রায়। ২০০৪ সালে সুব্রতর বড় ছেলে সুশান্ত বিয়ে করেন লখনউয়ের ব্যবসায়ী-কন্যা রিচাকে। ৬ দিন ধরে বিয়ের অনুষ্ঠান চলেছিল। অতিথিদের জন্য প্রায় ২৭টি প্রাইভেট জেট এবং ২০০টি মার্সিডিজ়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।অভিনেত্রী চাঁদনি তুরের সঙ্গে গাঁটছ়ড়া বাঁধেন ছোট ছেলে সীমান্ত। দুই ছেলের বিয়েতেও ঢেলে আয়োজন করেছিলেন সুব্রত। বিভিন্ন রিপোর্ট জানাচ্ছে, দুই সন্তানের বিয়ের আয়োজনে প্রায় ৫৬০ কোটি টাকা খরচ করেন সুব্রত।
আরও পড়ুনঃ জলের মত খরচ হচ্ছে টাকা! বিয়ে করে আদৌ সুখী হবে অনন্ত-রাধিকা? ফাঁস জগন্নাথ গুরুজির ভবিষ্যৎবাণী
ব্রাহ্মণী ও রাজীব রেড্ডির বিয়েঃ ২০১৬ সালে প্রাক্তন নেতা এবং ভারতীয় শিল্পপতি গলি জনার্দন রেড্ডি, মেয়ে ব্রাহ্মণীর বিয়ে দেন হায়দরাবাদ নিবাসী ব্যবসায়ী রাজীব রেড্ডির সঙ্গে। এই বিয়ের অনুষ্ঠানেও চোখ ধাঁধিয়েছিল গোটা দেশের। একটানা পাঁচ দিন ধরে বেঙ্গালুরুর বিলাসবহুল প্রাসাদে বিয়ের আসর বসেছিল। বিয়ের অতিথি তালিকায় রাজনীতিবিদ থেকে বলিউড তারকা , বাদ ছিল না কেউ। শোনা যায়, প্রায় ৫০ হাজার অতিথির উপস্থিতিতে চারহাত এক হয়। নিমন্ত্রণের কার্ড বাবদ খরচ হয়েছিল নাকি কয়েক কোটি টাকা। সেখানে গোটা বিয়ের খরচ নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছিল। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছিল, জনার্দন মেয়ের বিয়েতে প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা খরচ করেন।
আনিশা ও অমিতের বিয়েঃ ভারতীয় বংশোদ্ভুত শিল্পপতি লক্ষ্মী মিত্তল। ২০০৪ সালে লক্ষ্মীর মেয়ে আনিশা মিত্তল বিয়ে করেন ব্যবসায়ী অমিত ভাটিয়াকে। একমাত্র মেয়ের বিয়েতে ঢেলে খরচ করেছিলেন লক্ষ্মী। ছয় দিনের ইভেন্টে আগে হয় বাগদান, আইনি বিয়ে ৷ বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছিল প্যারিসে। এই বিয়ে নিয়েও হইচই পড়ে গিয়েছিল চারদিকে। বিয়ের খরচ থেকে আয়োজনের খুঁটিনাটি সব কিছু নিয়েই একটানা চর্চা চলেছিল। রিপোর্ট বলছে, মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে ২৫০ কোটি টাকা খরচ করেছিলেন লক্ষ্মী।
সোনম ভাসওয়ানি এবংকমল ফাবিয়ানিঃ ভারতীয় বংশোদ্ভুত ব্যবসায়ী সুনীল ভাসওয়ানির মেয়ের বিয়ের আয়োজনও হইচই ফেলেছিল। স্টালিয়ন গ্রুপের অধিকর্তা এবং সংযুক্ত আমিরশাহির ব্যবসায়ী সুনীল মেয়ে সোনমের বিয়েতে ঢেলে খরচ করেন। সোনম সাতপাকে বাঁধা পড়েন মুম্বইয়ের ব্যবসায়ী কমল ফাবিয়ানির সঙ্গে। অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় সোনম এবং কমল বিয়ে করেন। সেখানকার বেলভেডিয়ার প্যালেসেই বিয়ে সম্পন্ন হয় তাঁদের। অতিথি আপ্যায়ন থেকে বরকনের সাজগোজ, খাওয়াদাওয়া থেকে উদ্যাপনের খুঁটিনাটি— সব কিছুই ছিল বিলাসিতায় মোড়া। শোনা যায়, সুনীল মেয়ের বিয়েতে প্রায় ২৪০ কোটি টাকা খরচ করেছেন। শোনা যায়, সুনীল মেয়ের বিয়েতে প্রায় ২৪০ কোটি টাকা খরচ করেছেন।