পার্থ মান্নাঃ প্রতিবছর বর্ষার মরশুমে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ এলেও এবছর তেমনটা হয়নি। ছাত্র আন্দোলনের জেরে সরকারি বদল হওয়ার পর ইলিশ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল দেশের নবনির্মিত অন্তর্বর্তী সরকার। সাফ জানানো হয়েছিল এবছর পুজোয় ইলিশ পাঠানো হচ্ছে না। অবশ্য শুধুমাত্র ভারতে নয়, কোনো দেশেই রপ্তানি হচ্ছিল না ইলিশ। এই খবরে কিছুটা হলেও মন খারাপ হয়েছিল বাঙালির। কারণ পুজোয় ইলিশ খাওয়ার রীতিভঙ্গ হয়ে যেত। তবে পুজো ঘনিয়ে আসতেই পাল্টে গেল বাজি। আজ অর্থাৎ শনিবারেই ভারতে ইলিশ পাঠানোর ঘোষণা করল বাংলাদেশের সরকারি দফতর।
ভারতে ইলিশ পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ
আজ বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রকের তরফ থেকে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে তা থেকে জানা যাচ্ছে ৩০০০ কেজি ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৪শে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই বাংলাদেশের রপ্তানি সংস্থাগুলিকে আবেদন করতে হবে তার জন্য। কিন্তু হটাৎ এমন সিদ্ধান্ত বদলের কারণ কি? অনেকের মতে ভারতের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ঠিক রাখতেই এমনটা করা হচ্ছে। তবে ভারতের ‘ফিশ ইম্পোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন’ এর মতে ইলিশ আসছে সুতরাং কিভাবে বাঙালির কাছে ইলিশ পৌঁছে দেওয়া যায় সেটাই দেখতে হবে।
ইলিশ রপ্তানির জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি বাংলাদেশে
শনিবার বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে তাতে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, যে সমস্ত কোম্পানি ইলিশ রফতানি করতে চাই তাদের ২৪ তারিখের মধ্যেই আবেদন করতে হবে। এরপর কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না। মোট ৩০০০ মেট্রিক টন ইলিশ পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে আগস্টে সরকার পরিবর্তন হওয়ার সময় দেশের মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রকের তরফ থেকে ফরিদা আখতার জানান, ‘এবছর দুর্গাপুজোয় বাংলাদেশের হিন্দুরা ও অনান্য নাগরিকেরা যাতে ইলিশ খেতে পান সেটা আগে নিশ্চিত করা হবে। ভারতবর্ষের চেয়ে নিজের দেশের জনগণকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। আমরা ক্ষমাপ্রার্থী, কিন্তু ভারতে কোন ইলিশ পাঠাতে পারবো না। আমাদের মানুষেরাই দামি মাছ হওয়ার ক্রোন ইলিশ খেতে পারেন না। ভালো দাম পেতে ভারতে রপ্তানি করা হয় মাছ। তাই জনগণ যাতে খেতে পারে তাই রপ্তানি করা হবে না। তবে এবার সেই ঘোষণা পাল্টে গেল।
আরও পড়ুনঃ কলকাতাবাসীর বড় চিন্তার শেষ! পুজোর ৪ দিনের জন্য বিশেষ ঘোষণা করল KMC, খুশি সবাই
প্রসঙ্গত, বর্তমানে বাংলাদেশের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এমতাবস্থায় ভারত থেকে একাধিক পণ্য পাঠানো হয়েছে প্রতিবেশী দেশে। কিছুদিন আগেই ডিমের দাম অত্যাধিক বেড়ে গিয়েছিল। সেই সময় ৩ লক্ষেরও বেশি ডিম পাঠানো হয় ফলে ডিমের দাম ১৬ টাকা থেকে ৮ টাকা হয়েছিল। এরপর আলু ও পেঁয়াজ রপ্তানির জন্যও সাহায্য চাওয়া হয়।