কৃশানু ঘোষ, কলকাতাঃ দীর্ঘদিন ধরেই মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল প্লাস্টিকের টোকেন, পরিবর্তে চালু করা হয়েছিল কিউআর কোড বিশিষ্ট কাগজের টিকিট (Kolkata Metro Ticket Issue)। এর মূল কারণ ছিল দুটি, প্রথমত, একাধিক প্লাস্টিকের টোকেন হয় হারিয়ে যাচ্ছিল, কিংবা চুরি যাচ্ছিল। আর দ্বিতীয়ত, কাগজের টিকিট ব্যবহারের ফলে মেট্রো কর্তৃপক্ষের (Kolkata Metro Authority) আর্থিক চাপ কমেছে অনেকটাই। কিন্তু, নয়া এই পদ্ধতিতে বেড়েই চলেছে যাত্রী ভোগান্তি।
যাত্রী ভোগান্তি কেন? | Kolkata Metro Ticket Issue
দিনের ব্যস্ত সময়ে মেট্রো (Kolkata Metro Railway) সফরগুলিতে প্রত্যেকদিনই শোনা যাচ্ছে একাধিক অভিযোগ। প্রত্যেকেই জানাচ্ছেন, স্ক্যান করা যাচ্ছে না কিউআর কোড যুক্ত ওই নতুন কাগজের টিকিট। যার ফলে ভিড়ের সময় কিংবা অফিস হাওয়ারে প্ল্যাটফর্মে ঢোকা এবং বেরোনোর ক্ষেত্রে দেখা দিচ্ছে অহেতুক সমস্যা এবং অতিরিক্ত ভিড়। আর টিকিট স্ক্যানে দেরী হওয়ার ফলে যাত্রীদের মুখে শোনা যাচ্ছে মেট্রো (Kolkata Metro) হাতছাড়া হওয়ার অভিযোগও।
এখানেই শেষ নয় অভিযোগের তালিকা। একাধিক নিত্য যাত্রীর অভিযোগ, যে মেট্রো স্টেশনগুলিতে প্রবেশ করার সময় টিকিট স্ক্যান করার জন্য বেশি সময় লাগার কারণে কিংবা টিকিট স্ক্যান করার ক্ষেত্রে ত্রুটি হওয়ার কারণে স্মার্ট গেট খুলতে লাগছে সময়, ফলে ভিড় চলে যাচ্ছে চলমান সিঁড়ি পর্যন্ত। যার ফলে চলমান সিঁড়ি দিয়ে উঠেই আচমকা ভিড় পেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে দুর্ঘটনার পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন তাঁরা।
অভিযোগের তালিকায় রয়েছে অপরিচ্ছন্নতাও। একাধিক যাত্রী অভিযোগ জানিয়ে বলেছেন, সম্প্রতি এই কাগজের টিকিট ব্যবহার করার ফলে স্টেশনের ভিতরে ও বাইরে বেড়েছে অতিরক্তি অপরিচ্ছন্নতা। তাঁরা জানাচ্ছেন, সফর শেষে একাধিক যাত্রী হয় সঠিক স্থানে টিকিট ফেলছেন না, অথবা টিকিট ফেলার যথা স্থান সঠিক সময় পরিষ্কার না করায় তা উপচে পড়ে স্টেশনের ভিতরে নোংরা পরিবেশের সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও, কলকাতা মেট্রোর কর্মী সংখ্যা কমার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে।
জানা গিয়েছে, কাগজের টিকিটের ফলে ভিড় বাড়লে মেট্রো কর্মীরা তৎপর হয়ে নিজেদের বিশেষ কার্ড ব্যবহার করে গেট খুলে পরিস্থিতির সামাল দিচ্ছেন। কাগজবিহীন যাতায়াতের উদ্দেশ্যে যাত্রীদের ইউপিআই স্ক্যান কিংবা স্মার্ট কার্ড ব্যবহারের জন্যও জোর দিচ্ছেন মেট্রো কর্মীরা। মেট্রো কর্মীদের অভিযোগ, যে স্মার্ট গেট দিয়ে প্রতি মিনিটে ৪৫ জন যাত্রী বেরোতে পারেন, সেখানে বর্তমানে আট থেকে দশ জন যাত্রী বেরোতে পারছেন।
এই বিভিন্ন অভিযোগ প্রসঙ্গে কলকাতা মেট্রোর প্রগতিশীল কর্মচারী ইউনিয়নের সহ-সভাপতি শুভাশিস সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, ‘‘সারা দেশ যেখানে কাগজবিহীন পদক্ষেপ নেওয়ার দিকে এগোচ্ছে, সেখানে কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ পিছন দিকে হাঁটছেন। সার্বিক পরিষেবা উন্নত করার ক্ষেত্রে শুধু যন্ত্র নয়, তা চালানোর জন্য কর্মীও দরকার। এটা ওঁরা বুঝতে চাইছেন না। আমরা আরও কর্মী নিয়োগ করার দাবি জানিয়েছি।’’
