দীর্ঘ ১৯ দিনের লড়াইয়ের পর নিভল প্রদীপ। ১ লা নভেম্বর যে লড়াই শুরু হয়েছিল তার সমাপ্তি ঘটলো আজ দুপুরে। রবিবার রবিবার বেলা ১২.৫৯ নাগাদ না ফেরার দেশে চলে গেলেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। মাঝের এই কয়েকটা দিন একজন ফাইটারের মত লড়াই করেছে সে। আর এই গোটা সময়টাতে পরিবার ছাড়া তাঁর ছায়াসঙ্গী হয়ে ছিলেন, প্রেমিক সব্যসাচী।
যদিও সব্যসাচী আর ঐন্দ্রিলার লড়াইটা ক্যালেন্ডারের দিন গুনে করা সম্ভব নয়। প্রতিটা সেকেন্ড, প্রতিটা মুহূর্ত চোখের সামনে প্রিয়তমাকে কষ্ট পেতে দেখেছেন তিনি। নিজে হাতে করে নিয়ে এসেছিলেন, চেয়েছিলেন নিজে হাতে করেই ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। কিন্তু তা আর হল কই? এই মুহূর্তে সকলের উৎকণ্ঠা, অভিনেতা কেমন আছেন? সেই খোঁজ দিলেন সব্যসাচীর কাছের বন্ধু সৌরভ দাস।
এইদিন সৌরভের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘‘সব্য ভেঙে পড়েছে। কেমনই বা থাকবে এই পরিস্থিতিতে! ঐন্দ্রিলার পরিবারও ভেঙে পড়েছে। তবে সব্যকে বলেছি, এক ফোঁটা চোখের জল না ফেলতে। আজ ওকে সামলাতে হবে ঐন্দ্রিলার পরিবারকে। সব্যসাচী ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে আর কখনও কিছু লিখবে না। কারণ ‘মিষ্টি’র কথাতেই ও লিখতে শুরু করে।”
অভিনেতা আরো জানান, ‘এতদিন ঐন্দ্রিলার স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর ভাগ করে নিচ্ছিল সকলের সঙ্গে। যদি কেউ আশা করেন, ফেসবুকে কোনও পোস্ট দেবে সব্য, তা আর হবে না।’ আসলে মেয়েটা যে তার আত্মায় মিশে আছে। সেই ২০১৭ সালে প্রথম দেখা। ঐন্দ্রিলার প্রথম ধারাবাহিক ‘ঝুমুর’-এর সেটে আলাপ হয় তাদের। তারপর সেই আলাপ গড়ায় বন্ধুত্বে।
যদিও, প্রথম দেখাতেই যে, প্রেমে পড়েছিলেন এমনটা নয়। আসলে ঐন্দ্রিলা ঠিক ‘প্রথম দেখায় প্রেম’-এ বিশ্বাসী ছিলেননা। তাই শুরুটা হয় বন্ধুত্বের হাত ধরেই। আসলে অভিনেত্রী শুটিং থেকে ছুটি পেলেই বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বসতেন আড্ডা দিতে। সেখানে থাকতেন সব্যসাচীও। শুরু হয় ফোনালাপ। আর সেটাই যে কখন প্রেমালাপে পৌঁছে যায় তা ধরতেও পারেনি কেউ।
শুরু হয় প্রেমের সম্পর্ক। তারপর দীর্ঘ ৫ বছর বিভিন্ন চড়াই-উতরাই। মাঝে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আবার অসুস্থ। কাঁধে যন্ত্রণা শুরু হয়। জানা যায়, ডান দিকের ফুসফুসে টিউমার তৈরি হয়েছে। আবার শুরু হয় কেমো। পুরোটা সময় একে অপরের হাত শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন তারা। কিন্তু শেষমেশ হাত ছাড়লেন ঐন্দ্রিলা। অপূর্নই থেকে গেল একটা মিষ্টি প্রেমের গল্প।