Papiya Paul

এক বছরে ১২ টি ফসল! উত্তরাখণ্ডের এই কৃষক শিখিয়েছেন একই জমিতে সব থেকে বেশি আয়ের পদ্ধতি

এই ঘটনাটি ১৯৮০ দশকের। উত্তরাখণ্ডের(Uttarakhand) তেহারি গাওয়ালের বাসিন্দা সমাজকর্মী ও কৃষক বিজয় জাদ্দারি (Vijay Jaddari) বুঝতে পেরেছিলেন যে সময়ের সাথে সাথে উত্তরাখণ্ডের কৃষকরা তাদের প্রাচীন ফসল হারিয়ে ফেলছে। এর কারণ সেই সময় থেকে হাইব্রিড বীজ ব্যবহার শুরু হয়ে গিয়েছিল। শহরে বসবাসকারী মানুষদের প্রাচীনকালের বীজ সম্বন্ধে ধারনা না থাকলেও যারা গ্রামে থাকেন তাদের ভারতীয় বীজের মূলের গুরুত্ব ও খুব ভালোভাবে জানা রয়েছে।

   

একারণেই ওই কৃষক কয়েক দশক ধরে বীজ সংরক্ষণের আন্দোলন শুরু করেছেন। ১৯৮৬ সালে তার সেই ‘সেভ সিডস আন্দোলন’ (Save Seeds Movement)শুরু করেছিলেন যা এখনো পর্যন্ত চলছে। সে সময় থেকে তিনি চিন্তা করেছিলেন যে কিভাবে এই প্রাচীন বীজ বাঁচানো যায়। তিনি এই আন্দোলনের মাধ্যমে যতগুলো বীজ সংরক্ষণ করা যায় সেগুলি করেছেন। এর পাশাপাশি সনাতন পদ্ধতিতে একই জমিতে কোন সময়ে কিভাবে ফসল ফলাতে হয় সেগুলো তিনি কৃষকদের শিখিয়েছেন।

তিনি কৃষকদের ঘরে ঘরে গিয়ে এই কৃষিকাজের কৌশল শিখিয়েছেন। এই কৌশলের মাধ্যমে এমন অনেক ফসল ছিল যা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ফলানো সম্ভব হতো। এই কৃষক প্রায় ৩৫০ টির বেশি প্রাচীন বীজ সফলভাবে সংরক্ষণ করেছে। তার এই লড়াই এত সহজ ছিল না বহু মানুষ তার বিরুদ্ধে গিয়েছেন। কিন্তু তবুও তিনি থেমে যাননি। ধীরে ধীরে সময় অনুযায়ী নিজেই সমস্ত তথ্য মানুষের সামনে এনেছেন।

কঠোর পরিশ্রমের পর ২০২০ সালে তাঁর একটি পরীক্ষা সবাইকে অবাক করেছিল। এর কারণ হলো তিনি ক্ষেতে চাষ না করে উত্তরাখণ্ডে তার ক্ষেতে গমের ফসল তৈরি করে দেখিয়েছিলেন। তিনি তার এই পরীক্ষাটির নাম দিয়েছেন ‘জিরো বাজেট ফার্মিং’। তার এই মহাকৌশলকে আগে ইন্দিরা গান্ধীর পরিবেশ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছিল। তবে তার এই অসাধারণ কৃতিত্বকে কোন পুরস্কার দিয়ে মূল্যায়ন করা যায় না। তিনি যেভাবে নিজের কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ সিদ্ধি ছাড়াই বছরের পর বছর কাজ করে চলেছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়।