এই মুহূর্তে টলিপাড়ার হট টপিক ‘ফাটাফাটি’ (Fatafati)। ঋতাভরী চক্রবর্তী (Ritabhari Chakraborty) এবং আবির চট্টোপাধ্যায় (Abir Chatterjee) অভিনীত এই ছবি নিয়ে চর্চার শেষ নেই। চারিদিকে যেখানেই চোখ পড়ে সেখানেই ‘ফাটাফাটি’র চর্চা। আর হবে নাই বা কেন, এমন একটা সংবেদনশীল টপিককে পরিচালক তুলে ধরেছেন যে, সেটা নিয়ে আলোচনা হওয়ারই কথা। আর এবার এসব নিয়ে মুখ খুললেন আবির চট্টোপাধ্যায়।
এইদিন এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতাকে জিজ্ঞেস করা হয়, ফাটাফাটি গল্পের মূল আকর্ষণ তো নায়িকা। তাহলে তিনি করতে রাজি হলেন কেন? উত্তরে অভিনেতা জানান, “ আমার মনে হয়েছিল গল্পটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যদি মানুষকে জ্ঞান দেওয়ার বদলে সুন্দর করে গল্পের মাধ্যমে বলা যায়, তা হলে সেটা আমার নিজের পছন্দ হয়। তা ছাড়া আমার চরিত্রটাও আমায় খুব নাড়া দিয়েছিল। নৈতিক আদর্শের জন্য সে স্ত্রীর পাশে দাঁড়ায় না। বরং স্ত্রীকে ভালবাসে বলে। তাতে আমার চরিত্রটাকে অনেক বেশি রক্তমাংসের মনে হয়েছিল। ফলে রাজি হয়ে যাই।”
এইদিন আবিরকে আরো জিজ্ঞেস করা হয়, ববি শেমিং তো পুরুষদেরও হয়। সেই বিষয়ে কী মনে করেন তিনি? উত্তর আসে, ‘একদমই। ছোটবেলায় আমরা বন্ধুদের মধ্যে কত জনকে ‘এই মোটা, এই টেকো’ বলে ডাকতাম। অথচ বুঝতেই পারতাম না, এতে তাদের আত্মবিশ্বাসের অভাব হতে পারে। আসলে এই বিষয়গুলো খুবই মনের গভীরে ঢুকে রয়েছে। অনেক আগে বলা হত, পুরুষমানুষ তো সোনার আংটির মতো, তার আবার সোজা-ব্যাঁকা কী! মানে, পুরুষ হলে কোনও খুঁত হতেই পারে না। তাই আমরা বুঝতামই না যে, এক জন পুরুষও সমপরিমাণ অপমান ও কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে পারে। তাই জন্যই আমাদের এই ধরনের গল্পগুলো বলার দায়িত্ব বেড়ে যায়।’
নিজেরটা তো নিজে সামলে নেন আবির। তবে কাছের মানুষদের বডি শেমিংয়ের শিকার হতে দেখলে কেমন লাগে? জবাবে নায়ক বলেন, “ আমি সদর্পে বলতে পারি, ‘ফাটাফাটি’ ছবির নায়কের ভূমিকায় আমি ছাড়া আর কে অভিনয় করবে? আমার বাড়ির ঘনিষ্ঠতম মানুষটিকে সারা ক্ষণ কটাক্ষের শিকার হতে হয় এবং হচ্ছে। রোজ দেখি। আমি তাই গোটা জার্নিটাই জানি। কতটা কঠিন পথ, কতটা নজরদারির মধ্যে সারা ক্ষণ থাকতে হয়, কতটা অপমান সহ্য করতে হয়, সবটাই আমার দেখা।”
অভিনেতার আরো সংযোজন, “এখনই যদি আপনার সামনে যে কোনও সমাজমাধ্যমে ছবির নীচে মন্তব্যগুলো পড়ি, তা হলেও কয়েকটা দেখতে পাব। আমি এটুকুই বলব, যারা করছেন, তাদের শুধু সুস্থতা কামনা করতে পারি। যদিও জানি, হবে না। আমি ছবির ড্রাফ্ট শুনেই অরিত্রকে বলেছিলাম, ছবিটা আমি করবই। কারণ নিত্য দিন আমি এই নিয়েই বাঁচি।” এছাড়াও নিজের পরবর্তী ছবি রক্তবীজ নিয়েও কথা বললেন আবির চট্টোপাধ্যায়।
অভিনেতা জানান, “পুজোয় ‘রক্তবীজ’ মুক্তি পাবে। এই ছবির পরিকল্পনা অনেক দিন ধরেই চলছিল। আগে থেকে জানা থাকলে পুজোর পরিকল্পনা করতে সুবিধা হয়। তবে শুধু পুজো কেন, আমি অন্য যে কোনও সময় চেষ্টা করব, যেন এক দিনে আমার একটা করেই ছবি মুক্তি পায়। নিজের কাজের উপর ওইটুকু নিয়ন্ত্রণ এখন রাখতে পারি।” এদিকে ব্যোমকেশ প্রসঙ্গে আবির বলেন, “আমার সাতটা ব্যোমকেশ করা হয়ে গিয়েছে। এত ঘন ঘন আরও ব্যোমকেশ করা আমার অন্তত কোনও প্রয়োজন মনে হচ্ছে না। ব্যোমকেশ আমায় যতটা পরিচিতি, জনপ্রিয়তা এবং খ্যাতি দিয়েছে, আমার মনে হয় আমারও ব্যোমকেশ চরিত্রটার প্রতি কিছু দায়িত্ব রয়েছে। তাই এই মুহূর্তে আমি এই চরিত্রে আর অভিনয় করার তাগিদ অনুভব করছি না।”