ববি দেওল,সালমান খান,বলিউড,বিনোদন,ফ্লপ,কাম ব্যাক,জীবন কাহিনী,Bobby Deol,Salman Khan,Bollywood,Entertainment,Flop,Come back,Life story

Moumita

ফ্লপ ছবি, ব্যর্থতা, ডিপ্রেশনের শিকার ববি, জীবনের কঠিন সময়ে পাশে পেয়েছিলেন সালমান খানকে!

ভারতীয় সিনেমায় ধর্মেন্দ্রের অবস্থান কী, তা হয়তো কাউকেই বলার দরকার নেই। শুধু এতটুকুই বলা দরকার যে, ধর্মেন্দ্রর যুগের সিনেমা আর আজকের যুগের সিনেমার মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। তখন গোটা ইন্ডাস্ট্রি জুড়ে কয়েকজন সুপারস্টারের জয়জয়কার হলেও কাজের অভাব কারো ছিলোনা। কিন্তু ৯০ এর দশকে এসে একটু কঠিন হয়ে ওঠে গ্ল্যামারের এই দুনিয়া। সে অমিতাভ বা ধর্মেন্দ্র’র ছেলে হোক বা সুনীল শেট্টির মতো নাম হোক, সবাইকেই একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। এই সময় কয়েক ডজন নতুন মুখ দেখা গেলেও প্রতিযোগিতায় কোথায় হারিয়ে গেছে তার আর হদিশ পাওয়া যায় না।

   

রাজেন্দ্র কুমারের ছেলে কুমার গৌরবও দুটি দুর্দান্ত হিট দেওয়ার পরে অদৃশ্য হয়ে যায়। সঞ্জয় দত্ত, ঋষি কাপুর এবং অনিল কাপুরের মতো তারকাদের সিনেমাও ফ্লপ হতে শুরু করে। সুনীল শেঠিও প্রায় উধাও, মাঠে টিকে ছিলেন শুধু মাত্র অক্ষয় কুমার। তাও শুধু বি গ্রেড অভিনেতা হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন তিনি। অভিনয় জগতের দীর্ঘ পর্বে এমন একটি পর্যায় এসেছে যখন কোনও বড় ব্যানার তাকে লঞ্চ করেননি। এইসব নামের সাথে আরেক তারকাও এই সময় অচিরেই তলিয়ে গিয়েছিলেন।

ভাল সময়ের পাশাপাশি তারকাদের ক্ষেত্রে দীর্ঘ আসে দুঃসময়ও। এ রকমই এক পর্বের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল ববি দেওলকে। বাবা ধর্মেন্দ্র এবং দাদা সানির তুলনায় সাফল্যের নিরিখে অনেকটাই পিছিয়ে ববি দেওল। কেরিয়ারের মাঝপথে একটানা ছবি ফ্লপ করায় সমসাময়িক নায়কদের তুলনায় পিছিয়ে পড়েন ববি। নিজের ওয়েব সিরিজ আশ্রমের প্রচারে এসে তিনি নিজের কেরিয়ারের উত্থান পতনের গল্প ভাগ করে নিয়েছেন। ১৯৯৫ সালে ‘বরসাত’ ছবি দিয়ে তার বলিউডে আত্মপ্রকাশ, যদিও তার অভিনয়ে হাতেখড়ি হয়েছে শৈশবেই। ১৯৭৭-এ ববি শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছিলেন ‘ধরমবীর’ ছবিতে। এরপর ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’র পরিচালক শেখ কাপুর ববিকে লঞ্চ করার কথা ভাবেন কিন্তু ববির দূর্ভাগ্য তখনও পেছনে পড়েই ছিলো। বলিউডের অন্যতম প্রভাবশালী পরিচালক শেখর কাপুর হঠাৎ করেই ছবিটি থেকে সরে দাঁড়ান। কারণ হঠাৎ করে তিনি সেইসময় একটি আন্তর্জাতিক প্রোজেক্ট পেয়ে গিয়েছিলেন।

একদিকে যখন এই তারকারা টিকে থাকার জন্য লড়াই করছিলেন অপরদিকে বলিউডের তিন খান ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ববি তার এক ইন্টারভিউতে জানিয়েছিলেন, এমতাবস্থায় বলিউডের দাবাং সালমান খান সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তার দিকে। ববির কথায়, “সালমান একজন অসাধারণ মানুষ, তিনি অনেক বড় মনের মানুষ। শুধু আমার জন্যই নয়, যখন সে সত্যিকার অর্থে কারো জন্য চিন্তা করে, তখন সে তার জন্য নিজের সর্বাত্মক চেষ্টা করে।  আমি ভাগ্যবান যে আমি সেই কয়েকজনের মধ্যে একজন যার প্রতি সালমানের এত ভালবাসা রয়েছে।”

প্রসঙ্গত ববি নিজেই জানিয়েছেন, তিনি সে সময় নিজেকে বাইরের সবার থেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। হয়তো আরও তলিয়ে যেতেন, যদি না নিজেই নিজের রাশ টেনে ধরতেন। বক্স অফিসে ছবির ব্যর্থতা সহ্য করতে না পেরে এক সময় অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন ববি। নিজেকে তার দেওয়ালের মাঝে বন্দি করে মদের নিকট সঁপে দেন নিজেকে। ববি কথায়, “বউ যখন কাজে যেত আর আমি ঘরে বসে থাকতাম। আমার ছোট বাচ্চারা প্রশ্ন করত। বাবা, তুমি কাজে যাও না কেন?” তখন আমার মনে হলো, না, এভাবে চলবে না। আমি হাল ছেড়ে দিলে আমার সন্তানদের ভবিষ্যৎ কি হবে? এরপরই নিজেরা চেষ্টায় ফিরে আসেন জীবনের ছন্দে।

নিজে গিয়ে দেখা করেন ইন্ডাস্ট্রীর লোকেদের সাথে, ঠিক করেন ভালো, খারাপ কাজের কথা না ভেবে যা পাবেন তাতেই নিজের সবটা দিয়ে অভিনয় করবেন। এরপর ২০১৩ থেকে টানা চারবছর বাড়িতে বসে থাকার পর আবার ফিরে আসেন ‘রেস 3’এর হাত ধরে। এরপর কাজ করেন ‘হাউসফুল 3’ তে, এছাড়াও ‘ক্লাস অব ’৮৩’ এবং ‘আশ্রম’ ওয়েব সিরিজেও। জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময় অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকলেও যেভাবে জীবনে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি তা সত্যিই প্রশংসনীয়।