Papiya Paul

একসময় জলে বিস্কুট ডুবিয়ে খেয়ে কাটতো সারাদিন, আজ কাশ্মীর ফাইলস থেকে পেলেন জনপ্রিয়তা

‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ ছবি মুক্তির পর থেকেই বলিউডে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এমনকি সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বলিউডের অভিনেতারা এই ছবির প্রশংসা করেছেন। মাত্র ১৪ কোটির বাজেটের সিনেমা ইতিমধ্যে ২৫০ কোটির ওপর ব্যবসা করেছে। এই ছবির অভিনেতাদের প্রতিটি চরিত্রের অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয়েছে চারিদিকে। অনুপম খের, মিঠুন চক্রবর্তী, পল্লবী যোশী, দর্শন কুমার সহ প্রত্যেকের অভিনয় পছন্দ করেছেন দর্শকেরা। এই ছবিতে কৃষ্ণা পণ্ডিতের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন দর্শন কুমার।

   

অভিনেতা হিসেবে এই প্রথম তিনি সাফল্য পেয়েছেন। তবে এই অভিনেতার বলিউডে পাড়ি দেওয়ার যাত্রা অতটা সহজ ছিলো না। দক্ষিণ দিল্লির কিষানগড় গ্রামের একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন দর্শন কুমার। অভিনয় ক্যারিয়ার হিসেবে গড়ে তোলার জন্য মাত্র ২৪ বছর বয়সে মুম্বাইতে চলে আসেন। এরপরে চলে তার কঠিন পথ। প্রচুর পরিশ্রমের পর এতদিনে নামডাক হয়েছে অভিনেতার। অভিনয়জগতে আত্মপ্রকাশের আগে তিনি থিয়েটার গ্রুপে ৫ বছর থিয়েটার শিল্পী হিসেবে কাজ করেছিলেন। আর সেখানেই তিনি বলিউডের প্রবীণ অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পান।

এরপর ২০০১ সালে ‘মুঝে কেহেনা হে’ এই ছবিতে একটি ছোট চরিত্রে আত্মপ্রকাশ করেছেন তিনি। টানা কুড়ি বছর ধরে কঠোর পরিশ্রম করার পর নিজের পরিচিতি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন এই অভিনেতা। এছাড়া সালমান খানের ব্লকবাস্টার ছবি ‘তেরে নাম’ এ একটি ছোট চরিত্র অভিনয় করেছিলেন দর্শন কুমার। ছোটপর্দায় জিটিভির ‘ছোটি বহু’ ধারাবাহিকে পুরোব চরিত্রটি আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। এরপর ২০১১ সালে পৌরাণিক সিরিজ ‘দেবো ক দেব মহাদেব’ এ আদি শুক্রাচার্যের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। ছোটপর্দায় এত ভালো অভিনয় করা সত্ত্বেও সেভাবে কাজের সুযোগ পাননি তিনি।

এরপর ‘মেরি কমে’র বায়োপিকে মেরি কম-এর স্বামী ওনলার কমের ভূমিকায় কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। তবে এবার দ্য কাশ্মীর ফাইলসে তার অভিনয় তাকে চারিদিকে জনপ্রিয় করে তুলেছে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “একবার এক আনুষ্ঠানিক পোশাকে যাওয়ার জন্য তার কাছে ভাল জুতা ছিল না, তাই তখন আন্ধেরি থেকে প্রায় ২০০-৩০০ টাকায় জুতা কিনেছিলেন এবং সেগুলি বেশ কয়েক দিন ব্যবহার করেছিলেন। তার কাছে বাসের জন্য টাকা ছিল না তাই তিনি অডিশনের জন্য সমস্ত পথ হেঁটে গেছেন। খাবার জন্য চা, না হলে জল দিয়ে বিস্কুট খেতেন। আর এইভাবেই সারাদিন কাটিয়েছেন।”

আবার এই ছবিতে তিনি কীভাবে কাজ পেয়েছেন এবং তার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল সেই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন অভিনেতা। দর্শন বলেছিলেন যে তাকে পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী স্যার এবং ম্যাডাম পল্লবী প্রকৃত হত্যার ভিডিও গুলো দেখিয়েছিলেন, যাতে তিনি পুরো বিষয়টা বুঝতে পারেন। তিনি এই ভিডিও গুলোতে মানুষের কষ্ট দেখে এই চরিত্রে অভিনয় করার সিদ্ধান্ত নেন। আর এই চরিত্র তার ওপর মানসিক প্রভাব ফেলেছিল যে তিনি বিষন্নতায় চলে গিয়েছিলেন। অভিনেতা বলেছেন যে তিনি এতদিন পর্যন্ত যতগুলো চরিত্রে অভিনয় করেছেন তার মধ্যে এই চরিত্র সবচেয়ে কঠিন। প্রসঙ্গত, এর আগে ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’ ওয়েব সিরিজ অভিনয় করেছেন দর্শন কুমার।