জ্ঞান হওয়ার আগেই বাবাকে হারিয়েছেন তিনি। মুখে তখনও কথা ফোটেনি তার। মাত্র ২ বছর বয়সেই বাবাকে হারিয়েছেন। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের কারণে প্রাণ হারিয়েছিলেন দেবারতির বাবা। আর তারপর থেকেই দেবারতির মায়ের একমাত্র সঙ্গী তার মেয়ে।
আর সেই মেয়ের জন্যেই কোনোদিন জীবনসঙ্গীর খোঁজ করেননি তিনি। সন্তানকে বড় করার জন্য বিসর্জন দিয়েছেন নিজের সমস্ত শখ আহ্লাদ। তবে এবার সেই সন্তানই বড় হয়ে মায়ের নতুন জীবন গড়তে উঠে পড়ে লেগেছেন। ভেঙে দিয়েছেন সমাজের চিরাচরিত প্রথা।
বলে রাখি, দেবারতির মায়ের নাম মৌসুমি চক্রবর্তী। মাত্র ২৫ বছর বয়সে স্বামীকে হারানোর পর একমাত্র মেয়েকে সঙ্গী করে বাপের বাড়িতে চলে আসেন। সেখানেই মেয়ের বড়ো হওয়া। এক কথায় বলা যায় মানুষের মত মানুষ হয়েছেন তিনি। ৫০ বছর বয়সে মায়ের বিয়ে দিয়েছেন দেবারতি।
এক সাক্ষাৎকারে দেবারতি জানান, ‘আমি মাকে সব সময় বিয়ে করতে বলতাম। কিন্তু মা কিছুতেই রাজি হতেন না। মায়ের বিয়ে হলে আমার কী হবে, শুধু তা নিয়ে চিন্তা করে যেতেন।’ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বর্তমানে দেবারতি মুম্বইয়ে ফ্রিল্যান্স ট্যালেন্ট ম্যানেজার পদে কাজ করেন তিনি।
এই বিষয়ে এক সাক্ষাৎকারে দেবারতি বলেন, ‘আমার এক কাকিমা হঠাৎ এক দিন আমাকে ফোন করে জানান যে, মাকে এক জন পছন্দ করেন। জানতে পারি মায়ের সঙ্গে কিছু দিন আগেই তার আলাপ হয়েছে। মা যে জীবনে তার ভালবাসা খুঁজে পেয়েছেন তা শুনে আমি খুব খুশি হয়েছিলাম।’
আর এরপরেই দেবারতি ঠিক করেন যে তিনি তার মায়ের বিয়ে দেবেন। এরপর বছর ৫০ এর মৌসুমীর বিয়ে দেন পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা স্বপনের সাথে। এদিকে স্বপনের বয়সও ৫০ বছর। চলতি বছরের মার্চ মাসেই সমস্ত রিচুয়াল মেনেই মৌসুমি এবং স্বপ্নের চার হাত এক করেন দেবারতি।