‘সাফল্য’ শব্দটা মাত্র তিনটি অক্ষরের হলেও এর ওজন অনেক। সফলতার শিখরে পৌঁছানো যেমন কষ্টকর তেমনই কষ্টকর সেই সফলতাকে বজায় রাখা। অনেক পরিশ্রম, ত্যাগ, কষ্ট থাকে এর পেছনে। ইচ্ছে থাকলেই যে রাস্তা সহজ হবে এমনটা কিন্তু মোটেও নয়। এর জন্য লড়াই করতে হয় এবং নিজের জায়গা নিজে তৈরি করতে হয়। আর সেটাই প্রমাণ করে দিলেন বাঁকুড়ার (Bankura) প্রত্যন্ত এলাকার এক যুবক।
সূত্রের খবর, তার স্বপ্ন ছিল বড় কিছু হওয়ার, কিন্তু সেই পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় দারিদ্রতা। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মত অবস্থা, তাই পেটের খিদে মেটানোর জন্য ফেরিওয়ালার কাজ করতেন তিনি। কিন্তু স্বপ্ন যার অসীম এবং লক্ষ্য যার স্থির, দারিদ্রতা তাকে আর কাহাতক আটকে রাখতে পারে? আর তাই হাজারো সমস্যার পরেও নিজের লক্ষ্য অটুট রেখেছেন বাঁকুড়ার শালতোড়ার ছোটন কর্মকার। বর্তমানে তিনি IIT Kharagpur এর ছাত্র।
ছোটনের বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, বাঁকুড়া জেলার শালতোড়ার একদম প্রত্যন্ত গ্রাম পাবড়ার বাসিন্দা ছোটন কর্মকার। ছোটনের বাবা কানাই কর্মকারও পেশায় একজন ফেরিওয়ালা। মা, বাবা, দাদা আর ছোটন মিলে ৪ জনের সংসার। চারজনের পেটের ভাত জোগাড় করার জন্য ফেরিওয়ালার কাজ নেন ছোটন।
তবে কোনো বাধাই তার কাছে বাধা নয়। অবশেষে পেয়েই গেলেন নিজের কাঙ্খিত সাফল্য। গত পরশু অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই সন্ধেবেলা নাগাদ IIT Kharagpur এর ক্যাম্পাসে পৌঁছান তিনি। খুবই সাধারণ পোশাকে, চোখে মুখে হালকা ভয় নিয়েই IIT Kharagpur চত্বরে প্রবেশ করেন ছোটন। কিন্তু তবুও যেন সেটা তার কাছে স্বপ্নের মতোই!
ছোটনের এই সাফল্যে গর্বিত বাবা কানাই কর্মকারও। যদিও IIT ঠিক কী বস্তু তা তার অজানা। গ্রাম, পাড়া থেকে শুরু করে পরিবারেরও কেউ ভাবতে পারেনি যে ছোটন কখনো এই জায়গায় যেতে পারবে! তবে ঐ যে, মনের ইচ্ছে আর পরিশ্রম থাকলে কে আটকায়? এইমুহুর্তে তার লক্ষ্য আরো বড়ো। ছোটনের ইচ্ছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করবেন তিনি।