নিউজ শর্ট ডেস্ক: মাথায় একমাথা ঝাঁকড়া চুল আর সারাক্ষণ মুখে লেগে থাকা এক গাল হাসি এটাই ছিল অভিনেতা তথা জনপ্রিয় টলি অভিনেতা (Tollywood Actor) রণি চক্রবর্তীর (Ronnie Chakraborty) স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গি। তার সঙ্গে না ছিল কারও মন কষাকষি না ছিল কারও ঝামেলা। এক কথায় খুবই প্রাণ খোলা ভালো মানুষ ছিলেন টলিউডের এই পরিচিত মুখ অভিনেতা তথা জাতীয় স্তরের সাঁতারু রণি চক্রবর্তী।
বেশ কিছু জনপ্রিয় বাংলা সিরিয়ালে পার্শ্ব চরিত্রে (Side Role) অভিনয় করেই বেশ নাম-ডাক হয়েছিল তাঁর। জনপ্রিয় এই অভিনেতাকে শেষবার দেখা গিয়েছে স্টার জলসার জনপ্রিয় মেগা সিরিয়াল জল নুপুরে। এই সিরিয়াল চলাকালীনই হঠাৎ একদিন সন্তোষ পুকুরের এক পুকুরে ভেসে উঠেছিল অভিনেতার মরদেহ। যা দেখে আঁতকে উঠেছিল গোটা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি।
তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছিল একজন সাঁতারু হয়ে তিনি কিভাবে জলে ডুবে মারা যেতে পারেন? এসবের মধ্যেই শনিবার গিয়েছে এই প্রয়াত অভিনেতার জন্মদিন। এত বছর কেটে গেলেও তার মৃত্যুর স্মৃতি আজও টাটকা টলি পাড়ায়। কিন্তু সেদিন ঠিক কি ঘটেছিল তা বাকি সবার মত আজও প্রশ্ন তোলে অভিনেতা রাজদীপ গুপ্তর মনে।
নিজের প্রয়াত বন্ধু প্রসঙ্গে সম্প্রতি টিভি নাইন বাংলার সাথে এক খোলামেলা সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জানিয়েছেন,’ওর স্ত্রী আমার পাড়াতুতো বন্ধু। সেই সূত্রে চেনাশোনাটা ইন্ডাস্ট্রিতে ঢোকার আগে থেকেই। রনি মানেই এক গাল হাসি, প্রচণ্ড হুজুগে, মজা করতে ভালবাসে। মেকআপ রুম থেকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ একাই জমিয়ে রাখার দায়িত্ব সামলিয়েছে বরাবর।’
আরও পড়ুন: TRP-র অভাবে সত্যিই লালবাতি ‘সন্ধ্যাতারা’য়? অবশেষে মুখ খুললেন সন্ধ্যা ওরফে অন্বেষা
এরপরেই রাজদীপ জানান ‘১৫ মে– সেই অভিশপ্ত দিন। আমাদের এক বন্ধুদের গ্রুপ ছিল। সেখানে সবাই যে ইন্ডাস্ট্রির এমনটা নয়। ওই গ্রুপ থেকেই প্রথম ফোনটা আসে। আমি ভেবেছিলাম মিথ্যে। কী করে বিশ্বাস করব বলুন তো? যেদিন ঘটনাটা ঘটে ওইদিন ও ওর বাচ্চার অন্নপ্রাশনের নিমন্ত্রণ করতে বের হয়েছিল। তার চার-পাঁচ দিন আগে আমার সঙ্গে দেখা করে আড্ডা দিয়েছিল। কত কথা, কত গল্প হল একসঙ্গে। এখনও মনে আছে উইকেন্ড নাইট ছিল। আমায় বলল রাউডি মানে ওর বাচ্চার অন্নপ্রাশনে কী কী প্ল্যান করেছে। সেই মানুষটাই চার-পাঁচ দিন পর নেই, জাস্ট নেই। আমি বিশ্বাস করিনি।’
সেইসাথে এদিন রাজদীপ আরও বলেন ‘ওর বাড়ি যখন গেলাম তখন মিডিয়া আর লোকের ভিড় উপচে পড়ছে। কাকিমার সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। ওর মৃত্যুর কারণ নিয়ে এর পর শুরু হল একের পর এক রটনা। অনেকে অনেক কিছু বলেছিল। লেখা হয়েছিল জলে ডুবে মৃত্যু। কিন্তু একজন জাতীয় স্তরের সাঁতারুর কী করে জলে দুবে মৃত্যু হতে পারে এই কয় বছরেও মাথায় ঢুকল না আমার। মাঝেমধ্যে বন্ধুদের সঙ্গে যখন ওকে নিয়ে কথা হয় তখন ভাবি ঠিক কী হয়েছিল সেই দিন। কীভাবে একটা জলজ্যান্ত মানুষ জাস্ট নেই হয়ে গেল। জানি না ওর কেসটা আর খুলবে কিনা। কিন্তু রনির এভাবে চলে যাওয়াটা আজও আমার কাছে রহস্য।’