আপনি যদি ভ্রমণ পিপাসু হন তাহলে হয়তো প্রায়শই এদিক ওদিক ছুটি কাটাতে যান। এমতাবস্থায় আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে থাকবেন যে আমাদের ভারতেই এমন বেশ কিছু জায়গা আছে যেগুলি একে অপরের থেকে বহুল মাইল দূরে অবস্থিত হলেও এদের নামগুলো একই। অবাক করা বিষয় হলেও এরকম জায়গা বস্তবেই আছে। চলুন জেনে নিই কোন কোন জায়গার নাম রয়েছে এই তালিকায়।
১) ঔরঙ্গাবাদ : মহারাষ্ট্রে অবস্থিত ঔরঙ্গাবাদ শহরের কথা সবাই জানেন। এই শহরটি শাহজাহানের পুত্র ঔরঙ্গজেব দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে এটি দেশের একটি অন্যতম বড়ো শিল্পনগরী এবং পর্যটকরাও এখানে অজন্তা ও ইলোরা গুহা দেখতে আসেন। একই সঙ্গে বিহারের একটি জেলার নামও ঔরঙ্গাবাদ। মন্দির, ঐতিহাসিক স্থান এবং বিভিন্ন তীর্থস্থান এই জেলায় অবস্থিত।
২) চাম্বা : চাম্বা শহরটি হিমাচল প্রদেশের সেই স্থানে অবস্থিত, যেখানে রবি ও সাল নদীর সঙ্গম ঘটে। এখানে অনেক মন্দির এবং প্রাসাদ রয়েছে। এই জায়গায় ‘সুহি মাতা মেলা’ এবং ‘মিনজার মেলা’ নামে দুটি বিখ্যাত মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এটি তার চারু ও কারুশিল্পের জন্যও বিশেষ পরিচিত। অপরদিকে উত্তরাখণ্ডের চাম্বা, মুসৌরি এবং ঋষিকেশের সংযোগকারী রাস্তার ঠিক সংযোগস্থলে অবস্থিত। এর আশেপাশের পর্যটন স্থানগুলো হলো সুরকান্দা দেবী মন্দির, কানাতল, ধনৌলতি ইত্যাদি।
৩) বিলাসপুর : বিলাসপুর হলো হিমাচল জেলার সদর দপ্তর। বিলাসপুরে গোবিন্দ সাগর হ্রদের বেশিরভাগ জলাশয় রয়েছে যা সুতলজ নদীর উপর ভাকরা বাঁধ দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি আরেকটি বিলাসপুর হল সাউথ ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেডের সদর দপ্তর, যেটি কোল ইন্ডিয়ার বৃহত্তম এবং সবচেয়ে লাভজনক সহায়ক সংস্থা।
৪) দুর্গাপুর : দুর্গাপুর মহারাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ চন্দ্রপুর জেলায় নাগপুরের দিকে অবস্থিত। এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুর , যা পূর্ব ভারতের ইস্পাত শহর হিসাবে পরিচিত। চিকিৎসা ও শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ উন্নতি করছে শহরটি। এখানে রয়েছে দুটি ইস্পাত কারখানা, দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট এবং অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট।
৫) ফতেহাবাদ : উত্তর প্রদেশে অবস্থিত ফতেহাবাদ জেলা আগ্রা থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এবং ১৬৫৮ সালে ঔরঙ্গজেব দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই শহরটি। আজ শহরটি রাজ্যের একটি প্রধান শিল্প ও কৃষি কেন্দ্র। একইরকমভাবে , মধ্যপ্রদেশে ফতেহাবাদ নামে একটি শহর এবং একটি গ্রাম উভয়ই রয়েছে। এটি একটি রেলওয়ে জংশন, যা রতলামকে ইন্দোরের সাথে সংযুক্ত করে। এছাড়াও, হরিয়ানায় ফতেহাবাদ নামে একটি শহর রয়েছে, যেটি ১৪ শতকে তুঘলক রাজবংশ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
৬) খড়গপুর : বিহারের খড়গপুর শহরে একটি সুন্দর পুল আছে , যার নাম খড়গপুর তাল। মানুষ এখানে রামেশ্বর কুন্ড ও কালী মন্দির দেখতেও আসে। পাশাপাশি বিশ্বের দীর্ঘতম রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মটি পশ্চিমবঙ্গের খড়গপুর শহরে অবস্থিত। খড়গপুরের কলাইকুন্ডায় একটি বিমানবাহিনীর ঘাঁটি রয়েছে এবং আরেকটি সলুয়ায়।
৭) কোটা : রাজস্থানে অবস্থিত কোটা সম্পর্কে সবাই জানেন। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী এখানে আইআইটি এবং মেডিকেলের কোচিং নিতে আসে। কোটা একসময় বুন্দির রাজপুত রাজ্যের একটি অংশ ছিল। এটি ১৭ শতকে একটি পৃথক রাজ্যে পরিণত হয়। পাশাপাশি, কর্ণাটকের কোটা উদুপি থেকে কুন্দাপুরা যাওয়ার রাস্তার মাঝখানে পড়ে। এখানে অনেক মন্দির রয়েছে, যা তাদের উপকূলীয় স্থাপত্যশৈলীর জন্য পরিচিত।