Papiya Paul

অরুণাচল চীন সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব এবার নারীর কাঁধে, আকাশপথে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ক্যাপ্টেন সারিয়ার

আরো একবার প্রমাণিত হয়ে গেল, মেয়েরা পারে না এমন কোন কাজ হয়তো এই পৃথিবীতে নেই। সারিয়া আব্বাসী এই কথাটি আরও একবার প্রমাণিত করে দিলেন। কি করেছেন তিনি? চলুন এক নজরে জেনে নেওয়া যাক। আই এম এস গাজিয়াবাদ থেকে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে সারিয়া একটি সুরক্ষিত চাকরি করবেন বলে ভেবেছিলেন। বিদেশ থেকেও পাচ্ছিলেন চাকরির ডাক। কিন্তু গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসানো কোনদিন ঠিক পছন্দ ছিল না সারিয়ার। স্বপ্ন ছিল জলপাই পোশাক আর একটি দুর্গম জীবনযাপন।

   

চাকরি ছেড়ে তাই এই অসম্ভব স্বপ্নতে সম্ভব করে ফেলেছেন সারিয়া। উত্তরপ্রদেশের আকাশবাণী কর্তার মেয়ের কাঁধে এখন রয়েছে অরুণাচল প্রদেশের চীন সীমান্তে আকাশ রক্ষার ভার!! আমরা সকলেই জানি, সেনাবাহিনীতে মেয়েদের আসন ভীষণভাবে সীমিত, তার মধ্যেও রীতিমতো পরীক্ষা দিয়ে সেনাবাহিনীতে প্রবেশ করেন মহিলা সেনারা।

২০১৫ সালে কম্বাইন্ড ডিফেন্স সার্ভিসের ফর্ম যখন জমা দিয়েছিলেন সারিয়া, তখনো বাবা-মায়ের মনে ছিল চরম অবিশ্বাস। কিন্তু সেই অবিশ্বাসকে সম্ভব করে দেখালেন সারিয়া। মাত্র দুই বারের চেষ্টায় ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মায়ের জন্মদিনে এই লেফটেন্যান্ট হয়ে দেখালেন সারিয়া। বর্তমানে তাওয়ান সেক্টরে মোতায়েন আর্মি এয়ার ডিফেন্স রেজিমেন্টের ট্রুপ কমান্ডার তিনি।

গত বছর থেকেই উত্তপ্ত ভারত-চীন সীমান্ত। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার আশেপাশে বিভিন্ন অঞ্চলে চিন সেনা বাড়িয়ে চলেছে সামরিক ঘাঁটি। যেকোনো সময়ে অরুণাচলের আকাশপথে ঢুকে পড়তে পারে চালকহীন সশস্ত্র বিমান অথবা কপ্টার। এই অনাকাঙ্ক্ষিত প্রবেশ আটকানোর জন্যই ভারতীয় সেনাবাহিনী অরুণাচল প্রদেশের অন্যান্য নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে মোতায়েন করেছে বফর্স কামান ও এম-৭৭৭ আল্ট্রালাইট হাউইৎজ়ার কামান- যার পাল্লা ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত।

এই প্রসঙ্গে ক্যাপ্টেন সারিয়া জানিয়েছেন, সুইডিশ বর্ফস কোম্পানির কাছ থেকে ১৯৬০ ১৯৬০-এর দশকে এল-৭০ এয়ার ডিফেন্স গানগুলি প্রথম কেনা হয়েছিল। তার মধ্যে সক্রিয় ১১৮০টি এল-৭০। এগুলোর মধ্যে ২০০টি এল-৭০তে মাজ়ল ভেলোসিটি রেডার, ইলেক্ট্রো অপটিকাল সেন্সর, লেজ়ার রেঞ্জ ফাইন্ডার ও অটোম্যাটিক টার্গেট ট্র্যাকিং প্রযুক্তি রয়েছে। তাই নতুন অবতারের এল-৭০ যে কোনও ড্রোন, হেলিকপ্টার, বিমানকে দ্রুত ট্র্যাক করে আঘাত হানতে সক্ষম।

উল্লেখ্য, রাম জানকী নগরের বাসিন্দা ছোট থেকে সেনাবাহিনীতে কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করতেন মনে মনে। আজ সেই স্বপ্ন হয়েছে পূরণ। এই তরুনীর মতে, মেয়েদের জন্য ভারতীয় সেনার ফিল্ড পোস্টিং এ সুযোগ এখনো অনেকটাই কম। কিন্তু চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মানসিকতা থাকলে স্বপ্ন একদিন পূরণ হবেই।