আমাদের পরিচিত এমন অনেক মানুষ আছে যারা বলেন, চাকরি করতে ভালো লাগেনা। চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় মন দিয়েছেন এমন ঘটনা তো হামেশাই শোনা যায়। কিন্তু পিএইচডি ছেড়ে চাষবাস শুরু করেছেন এরকম ঘটনা শুনেছেন কখনোও? এরকমই কান্ড করে নজিরবিহীন উদাহরণ তৈরি করেছেন কাশ্মীরের বুদগাম জেলার বাসিন্দা, ইনশা রশুল। কোরিয়াত পিএইচডি ছেড়ে দিয়ে নিজের স্বপ্নকে বেছে নিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ইনশা তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় ‘মলিকিউলার সিগন্যাল’ নিয়ে গবেষণায় ব্যস্ত ছিলেন তিনি নিজের সমস্ত কাজকর্ম ছেড়ে সম্পূর্ণ রূপে জৈব-কৃষিকাজে মনোনিবেশ করেছেন। তার তৈরি ‘ফার্ম-টু-ফর্ক’ এখন দেশের অন্যতম প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড গুলির মধ্যে অন্যতম। উল্লেখ্য, ইনশা যখন এই প্রোজেক্টের উপর কাজ শুরু করেছিলেন সেই মুহূর্তে তার কাছে ছিলো কেবল পৈতৃক ৩.৫ একর জমি। যে জমিতে তার তার পরিবার স্ব-ব্যবহারের জন্য ফসল এবং শাকসবজি চাষ করত।
এরপর তিনি স্থানীয় কৃষকদের সাথে দেখা করেন এবং তাদের থেকে প্রয়োজনীয় বীজ ও সার কেনেন। এর পাশাপাশি খোঁজ করতে থাকেন দক্ষ শ্রমিকের। পেশায় একজন বিজ্ঞানী হওয়ায় তিনি জানতেন শুধুমাত্র খাতা কলমে গবেষণা করাই ফসল ফলানোর জন্য যথেষ্ট নয়। এর জন্য প্রয়োজন হাতেকলমে পরীক্ষা। এই কারণেই তিনি বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন জাতের বীজ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মাসের পর মাস কাটিয়ে দিয়েছেন।
তার এই উদ্যোগ সম্পর্কে বলতে গিয়ে ইনশা জানিয়েছেন, “আমি যতটা সফল হয়েছি তার চেয়ে অনেক বেশি ব্যর্থ। কখনও ফসল ফোটেনি, বা সার কাজ করেনি, কখনও বা অতিরিক্ত জল দিয়েছি, বা ভুল মৌসুমে বীজ রোপণ করেছি। এই পরীক্ষাগুলি ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলেছিলো। এবং অবশেষে আমি সঠিক পথে এগোতে থাকি এবং কৃষিকাজ কেই কেরিয়ার হিসেবে বেছে নিই এবং এই সিদ্ধান্ত আমার জীবন বদলে দিয়েছে।”
প্রসঙ্গত, ইনশা বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের প্রাক্তন ছাত্রী। সাধারণত ইনশা তার ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুক পেজে তার ফসল বিক্রি করে থাকেন। তার দাব কোনো ফসল বিক্রি হতে ২৪ ঘন্টার বেশি সময় লাগেনা। ইনশার কথায়, গত নভেম্বর এবং ডিসেম্বরে তিনি প্রায় ৮ লাখ টাকা আয় করেছেন। পিএইচডি থেকে কৃষিকাজ, ইনশার এই সফর সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।