সুর, তাল, ছন্দ সব এক সুতোয় মিলে তৈরি হয় একটি গান। মন খারাপ কিংবা ভাল যে কোনও আবেগ নিমেষে পরিবর্তন করার ক্ষমতা যদি কোনো কিছুর আছে তাহলে তা হলো সঙ্গীত। আর এই গান দিয়েই কোটি কোটি মানুষকে বিনোদন জুগিয়ে আসছেন সঙ্গীত শিল্পীরা। আজ এমনই এক কিংবদন্তি শিল্পীর কথা বলবো যিনি দেশকে একের পর এক সাড়া জাগানো গান উপহার দিয়েছেন।
আমরা বলছি খ্যাতনামা সঙ্গীত শিল্পী আশা ভোঁসলের কথা। তাঁর মধুর কণ্ঠে কত মানুষ যে মন হারিয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। আজ এই মানুষটিরই ৯০ তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৩৩ সালের ৮ ই সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্রের সাংলিতে জন্ম হয়েছিলো এই কিংবদন্তি তারকার।
আশা দেবীর সঙ্গীত জীবনের কথা বললে, শৈশব থেকেই গানের প্রতি বিশেষ আগ্রহী ছিলেন তিনি। মাত্র ১০ বছর বয়সেই সঙ্গিত জীবনে পা রাখেন আশা। আজ তার কোটি কোটি ভক্ত থাকলেও কেরিয়ারের শুরুটা মোটেও সহজ ছিলোনা। মাত্র ৯ বছর বয়সে বাবা দীননাথকে মঙ্গেশকরকে হারান। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির প্রয়াণের পর আর্থিক সংকটে পড়ে গোটা পরিবার।
অন্ধকারের মধ্যেও একটু আলো খোঁজার চেষ্টায় বোন লতাকে নিয়ে গানের জগতে প্রবেশ করেন তিনি। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, আশার বাবা দীননাথ মঙ্গেশকর ছিলেন সেই সময়কার নামকরা নাট্য শিল্পী। পাশাপাশি শাস্ত্রীয় সংগীতেও তুখোড় পারদর্শী ছিলেন তিনি। দুই বোনেরই সঙ্গীতে প্রথম হাতে খড়ি তো তাঁর হাত ধরেই।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, আশা তার দীর্ঘ কেরিয়ারে হিন্দি, বাংলা, তামিল, তেলেগু সহ মোট ১২০০০ টিরও বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। তবে কথায় আছে, কোনো মানুষই সমস্ত সুখের অধিকারী হননা। কেরিয়ারে যতটা সফল তিনি, বাস্তব জীবনে আবার ততটাই চড়াই উৎরাই। মাত্র ১৬ বছর বয়সে গনপত রাও ভোঁসলের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু বিয়ের ১১ বছর যেতে না যেতেই আলাদা হয়ে যেতে হয় তাঁদের।
এরপর ইন্ডাস্ট্রির খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব ‘আর ডি বর্মন’-এর সঙ্গে দ্বিতীয়বার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে বিয়ের এক দশক কাটতে না কাটতেই পৃথিবীকে বিদায় জানান ‘আর ডি বর্মন’। তবে ব্যক্তিগত জীবনে যাই ঘটে থাকুক সঙ্গীত জীবনে যে তিনি চূড়ান্ত সফল তাতে কোনো সন্দেহ নেই।