বাংলা টেলিভিশনর ইতিহাসের অন্যতম সফল ধারাবাহিক ‘কৃষ্ণকলি’। আর এই ধারাবাহিকের হাত ধরেই টেলিভিশনে আত্মপ্রকাশ করেন শ্যামা ওরফে তিয়াশা লেপচা। প্রথম ধারাবাহিকেই বাজিমাত করেছিলেন তিনি। এক কালো মেয়ের চরিত্রে তার অভিনয় এতোটাই সমাদৃত হয়েছিলো যে লাগাতার ৩ বছর সম্প্রচারিত হয়েছিলো ধারাবাহিক। তাহলে এহেন জনপ্রিয়তার পরেও আত্মহত্যা কেন করতে চেয়েছিলেন অভিনেত্রী তিয়াশা?
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ছোটপর্দার শ্যামার ইন্ডাস্ট্রিতে আগমণ তার প্রাক্তন স্বামী সুবানের হাত ধরে। এই নিয়ে অনেকে তাকে খোঁচা দিলেও তিনি অকপটে সেই সত্যতা স্বীকার করে নেন। এই মর্মে একটা সুন্দর উদাহরণ উপস্থাপন করে তিনি বলেন, ছোটবেলায় বাবা-মা তাদের সন্তানকে সাইকেল কিনে দেন বটে কিন্তু চালাতে হয় নিজেকেই।
অর্থাৎ সুবান তাকে রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছিল এটা যতটা সত্য ঠিক ততটাই সত্য তার নিজের করা স্ট্রাগলটা। স্বামীর হাত ধরে টলিপাড়ায় এন্ট্রি পেলেও নিজস্ব প্রচেষ্টায় দর্শকের পছন্দের পাত্রী হয়ে উঠেছেন তিনি। গোবরডাঙার এক অতি সাধারণ মেয়ে থেকে তিয়াশা লেপচা হয়ে ওঠার জার্নিতে তার নিজের অবদানও কম নয়। কিন্তু এতো স্ট্রাগলের পরেও আত্মহননের চিন্তা? ঠিক কী হয়েছিলো অভিনেত্রীর জীবনে?
সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ার একটি অনুষ্ঠানে খোলা মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিজের জীবনের অন্ধকারাচ্ছন্ন দিকটা তুলে ধরেছেন তিয়াশা। দীর্ঘ চার বছরের সফল কেরিয়ারের পরেও একটা কাজের জন্য ক্রমাগত লড়াই করে যেতে হচ্ছে তাকে। অভিনেত্রীর কথায়, দীর্ঘ চার বছর ধরে একটা ফেমাস ধারাবাহিকে কাজ করার পরেও যখন কোনো কাজ পাচ্ছিলেননা তখন চরম হতাশা ঘিরে ধরেছিলো তাকে। সেইসময় তার মনে হতো বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই বোধহয় বেশি ভালো।
একদিকে বিবাহ বিচ্ছেদের রেশ অপরদিকে কেরিয়ারেরও ভরাডুবি অবস্থা। এমতাবস্থায় দিশেহারা হয়ে গেছিলেন তিনি। তিয়াশা লেপচা থেকে পদবী পাল্টে রায় এবং আবারও সেই পদবী বদলে তিয়াশা লেপচা-তে ফিরে আসার সফরটা এতোটাও সহজ ছিলোনা যে। এইদিন এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে সকলের কাছে তিনি একান্ত আবেদন করেছেন যাতে সকলে তাকে তিয়াশা লেপচা বলেই ডাকেন। এমনকি শুধু তিয়াশা বললেও আপত্তি নেই তার।
পাশাপাশি সিনে দুনিয়ার তারকাদের ব্যক্তিগত জীবনের দুঃখ কষ্টের দিকটাতেও আলোকপাত করেছেন অভিনেত্রী। তিনি বলেন, তারা ক্যামেরার সামনে কাজ করেন বলে এই নয় যে, তাদের মধ্যে ইমোশন নেই। দুঃখ, কষ্ট, ক্ষোভ, রাগ তাদেরও হয়। আজও নাকি অনেকেই তার ডিভোর্স নিয়ে খোঁচা দেন। অভিনেত্রীর মতে এগুলো করা উচিত নয়। এই ধরনের মন্তব্য মানুষের ক্ষতিকর হতে পারে বলেও জানান তিনি। তবে সবশেষে সুবানকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি তিয়াশা।