বলিউড আর নেপোটিজম যেন একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। পূর্বেও এই বিষয় নিয়ে আলোচনা চললেও জলঘোলা হয় মূলত করণ জোহরের চ্যাট শো ‘কফি উইথ করণ থেকে। করণের এই শো’তে অভিনেত্রী কঙ্গনা করণ জোহরের বলেন যে, তিনিই স্বজনপ্রীতির মূল কান্ডারী। সেই যে বিতর্ক শুরু হয়েছে তা আজও অব্যাহত।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই বিতর্কে আরো একটু ধুনো ছড়িয়ে দেন ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ খ্যাত পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। পরিচালক জানান, ২০০০ সালের আগে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে কোনও স্বজনপ্রীতি ছিল না। শ্রীদেবী থেকে জিতেন্দ্র সবাই বাইরে থেকে এসেই নিজেদের পরিচিতি তৈরি করেছিলেন। তবে তাদের সন্তানরা আসার পর থেকেই বলিউড যেন বন্ডেড মাফিয়া হয়ে উঠেছে।
এক নামি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথোপকথনের সময় বিবেক বলেন, ‘আমার মনে হয় ২০০০ সালের আগে বলিউড সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। বেশিরভাগ মানুষই বহিরাগত ছিলেন। তারকাদের মধ্যে যারা ২০০০ সালের মধ্যে বড় তারকা হয়েছিলেন, তারপরে তাদের সন্তানরা আসে এবং তারা এক একজন মাফিয়া হয়ে ওঠে। বহিরাগতদের সঙ্গে তাদের কিছুটা সমস্যা রয়েছে।’
শুধু তাই নয়, পরিচালকের আরো সংযোজন, ‘২০০০ এর পরে, বলিউড মাফিয়ারা অন্যদের জন্য দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। তখন এই ফিল্মমেকাররা বহিরাগত প্রতিভাবান অভিনেতাদের কেরিয়ার ধ্বংস করতে শুরু করে।’ অগ্নিহোত্রীর কথায়, ‘ডাক্তারের ছেলে ডাক্তার হয়, এটা খুবই স্বাভাবিক। এতে ক্ষতি নেই তবে বলিউড মাফিয়ারা শিল্পের স্বজনপ্রীতির কারণে যোগ্য ব্যক্তিদের পরিবর্তে অযোগ্য ব্যক্তিদের প্রচার করছেন।’
কিছু কিংবদন্তি তারকার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘ধর্মেন্দ্র একজন বহিরাগত, জিতেন্দ্র, রাজেশ খান্না, বিনোদ খান্না, অমিতাভ বচ্চন, শত্রুঘ্ন সিনহা, গোবিন্দা সকলেই বহিরাগত। শ্রীদেবী ও মাধুরী দীক্ষিতও ছিলেন বহিরাগত। এরা বলিউডে সফল হয়েছেন। তাদের ছেলেমেয়েরা এল, তারপর পরিচালকের ছেলেমেয়েরা এল, তারপর প্রযোজকের ছেলেমেয়েরা এল। এতে আমার কোনও সমস্যা নেই। যখন আপনি অযোগ্যদের প্রচার করেন তখনই আমার সমস্যা হয়।’
আর সত্যি বলতে একথা কারোরই অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বলিউড এখন স্বজনপোষনে চলে। আর যার কারণে দিন দিন পড়ে যাচ্ছে ছবির কোয়ালিটি। দর্শকও হারাচ্ছে সেই কারণেই। কারণ এখন মানুষ ভালো কন্টেন্ট খোঁজে, ভালো অভিনয় খোঁজে। কিন্তু এই নেপোটিজমের বাড়বাড়ন্তে সেই বিষয়টাতেই ঘাটতি হয়ে গেছে যেন।