ব্রিটিশ বিজ্ঞানী (British Scientist) এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষক জিওফ্রে হিন্টন (Geoffrey Hinton), যিনি জীবনের একটা বড় সময় দিয়েছেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (Artificial intelligence) পেছনে। আর এবার সেই ব্যক্তিই সাবধান করলেন গোটা বিশ্বকে (World)। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স যে সমাজের জন্য কত বড় ক্ষতি ডেকে আনতে পারে সেটা উপলব্ধি করেই গুগল (Google) ত্যাগ করলেন জিওফ্রে হিন্টন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর প্রয়োগ নিয়ে গোটা পৃথিবীতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। ক্রমশ এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যেই গোটা বিশ্বের বহু সংস্থায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি একটি সমীক্ষা জানাচ্ছে, আগামী ৫ বছরে বিশ্ব জুড়ে কাজ হারাতে পারেন ১ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ।
শুনে চমক লাগলেও ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বা ডব্লিউইএফের রিপোর্ট কিন্তু এই কথাই বলছে। আসলে দিনদিন যেভাবে প্রযুক্তি উন্নত হচ্ছে তাতে মানুষের জায়গা দখল করছে মেশিন। কর্মীর অভাব মেটাচ্ছে নানান ধরণের যন্ত্রপাতি। আর এই কারণেই বিভিন্ন সংস্থায় কর্মী সঙ্কোচন হবে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
গবেষকদের মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বহুল ব্যবহারের ভাল দিক যেমন আছে, তেমনই রয়েছে নেতিবাচক কিছু বিষয়। তারমধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকর হল কর্মীসঙ্কোচন। AI ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন সংস্থা কিছু কর্মী যেমন নিয়োগ করবে তেমন তার চেয়ে অনেক বেশি কর্মী ছাঁটাইও করবে। যে কারণে কিছু পেশা হয়ত হারিয়েই যাবে।
উদাহরণস্বরূপ, পোস্টাল সার্ভিস ক্লার্ক, ডেটা এন্ট্রি কর্মী, ক্যাশিয়ার, হিসাব রক্ষক,—এই ধরণের পেশাগুলি আগামী ৫ বছরে বহুলাংশে হ্রাস পাবে। সবে মিলিয়ে এটা বলাই যায় যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মনুষ্য সমাজের জন্য ভালোর পাশাপাশি বহু খারাপ জিনিসও ডেকে আনছে। আর এই কারণেই নিজের কাজের জন্য অনুশোচনা করে গুগল ছাড়লেন এআই ‘গডফাদার’ হিন্টন।
নিকট অতীতে এক আলোচনা সভায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পজিটিভ এবং নেগেটিভ দিকের তুল্যমূল্য বিচার করা হয়েছিল। গবেষকদের ধারণা, আগামী ২০২৭ সালের মধ্যে ৮ কোটি ৩ লক্ষ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়তে পারে। আগামী ৬ বছর শুধু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বহুল ব্যবহারে প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষের কাজ চলে যাবে। অতএব সময় থাকতেই সাবধান হতে হবে মানুষকে।