রতন টাটা এমন একটা নাম যা দেশের প্রতিটি বাচ্চা শিশুও জানে। দেশ থেকে বিদেশে সব জায়গাতেই ছড়িয়ে রয়েছে তার ব্যবসা। নুন থেকে শুরু করে মোটোর, এয়ার ইন্ডিয়া, টাইটান, তাজ সবেতেই তার কোম্পানির অগাধ বিচরণ। কীভাবে করলেন এতোকিছু, এই প্রশ্ন কমবেশি সকলের মনেই জেগে থাকবে।
বিশেষ করে যারা নতুন স্টার্ট আপ খুলছেন তাদের মধ্যে এই প্রশ্ন আসাটা খুবই স্বাভাবিক। এমতাবস্থায় ভাবুন তো খোদ রতন টাটা এসে আপনাকে ব্যবসার জন্য টিপস দিচ্ছেন তাহলে কেমন হবে ব্যাপারটা! কথাটা শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও সম্প্রতি ঠিক এমনটাই ঘটেছে। টাটা গ্রুপস অ্যান্ড সন্সের কর্ণধার রতন টাটা নিজে দেখা করেছেন এক ব্যবসায়ির সাথে।
রিপোস এনার্জির ফাউন্ডার অদিতি ভোঁসলে যখন নিজেদের ব্যবসা শুরু করেন তখন তার ভীষণ ইচ্ছে ছিলো ‘রতন টাটা’কে মেন্টর হিসেবে পাওয়ার। যদিও তার এই বক্তব্যকে বাকিরা হেসে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলো যে, এতো বড়ো ব্যবসায়ী মানুষ কখোনোই তার মতো ছোটো ব্যবসায়ীর সাথে দেখা করবেননা। আর তাছাড়া তাঁর কাছে এতোটা সময় নেই যে, তিনি এসে অদিতির ব্যবসা অ্যানালাইসিস করবে।
তবে সবার এইসব মন্তব্যে মোটেও দমে যাননি অদিতি। মহান বিজনেস টাইকুনের সাহায্য চেয়ে চিঠি লেখে সে। চিঠিতে জানায় তার সদ্য শুরু করা ব্যবসা সম্পর্কে কিছু টিপস চায় সে। প্রথমে চিঠির উত্তর না পেয়ে তার সাথে দেখা করতেও যায় অদিতি এবং তার স্বামী। অবাক করা বিষয় হলো রতন টাটা মোটেও তাকে ফিরিয়ে দেননি। তিনি সাদরে ডেকে নিয়েছিলেন তাঁকে। তারা প্রথমে গিয়ে ১২ ঘন্টা অপেক্ষা করার পরও রতন টাটার দেখা না পেলেও হোটেল রুমে ফিরে গিয়ে চমকে যান।
হোটেলে একটি ফোন আসে, যে ফোনে বলা হয়, “হ্যালো, আমি কি অদিতির সঙ্গে কথা বলতে পারি?’’ এর উত্তরে অদিতি জানতে চান, ‘‘আপনি কে বলছেন?’’ তখন ফোনের ওপ্রান্ত থেকে উত্তর আসে, ‘‘আমি রতন টাটা বলছি, তোমার চিঠি পেয়েছি, আমরা কি দেখা করতে পারি?” স্বপ্নকে বাস্তবে পেয়ে নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারেনা অদিতি।
পরদিন ফের তাঁর বাড়িতে পৌঁছায় এই দম্পত্তি। তিন ঘন্টার মিটিংয়ে তাদের ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তর টিপসও দেন তিনি। শুধু তাই নয় রতন টাটা তাঁদের সঙ্গে কেবল সাক্ষাৎই করলেন না, এই সংস্থায় মোটা অঙ্কের বিনিয়োগও করেছেন। এবং বলাই বাহুল্য চেতন এবং অদিতির এই স্টার্ট আপ এখন দূর্দান্ত গতিতে দৌড়াচ্ছে। স্টার্টআপটি এখন ‘মোবাইল ইলেকট্রিক চার্জিং ভেহিক্ল’ লঞ্চ করেছে। এই কিংবদন্তি মানুষটির একটা ফোনকল কীভাবে বদলে দিয়েছে অদিতি, চেতনের জীবন তা সত্যিই প্রশংসনীয়।