দেশের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষাগুলির মধ্যে অন্যতম হলো UPSC। আর এই পরীক্ষা নিয়ে বেশিরভাগ মানুষেরই ভাবনা যে, শুধুমাত্র দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে ভালো নম্বর নিয়ে পাশ করা শিক্ষার্থীরাই UPSC তে পাশ করেন। যারা কোনো পরীক্ষায় ফেল করেছে তারা কখোনোই কোনো উচ্চপদস্থ চাকরি পেতে পারেনা।
কিন্তু আজ আমরা আপনাকে এমন এক মানুষের সাথে পরিচয় করাবো যিনি দশম-দ্বাদশ শ্রেণীতে ফেল করার পরও সবার কটাক্ষ, নিন্দাকে পেছনে ফেলে আইএএস হয়েছেন। আজ আমরা বলছি আইএএস অঞ্জু শর্মার কথা। মাত্র ২২ বছর বয়সেই প্রথম প্রচেষ্টাতেই UPSC পাশ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, দশম শ্রেণির প্রি-বোর্ডে রসায়নে ফেল করেছিলেন অঞ্জু শর্মা। এরপর দ্বাদশ শ্রেণিতে অর্থনীতিতেও ফেল করেন। যদিও তিনি অন্যান্য বিষয়ে যথেষ্ট ভালোই নম্বর পেয়েছিলেন। কিন্তু কোনোভাবেই ভেঙে পড়েননি তিনি। অঞ্জুর বিশ্বাস, মানুষ যখন জীবনে ব্যর্থ হন তখন সফলতার আসল প্রস্ততি শুরু হয়। অঞ্জুর কথা থেকেই জানা যায় দ্বাদশ শ্রেণীতে দ্বিতীয়বার ফেল করার পর থেকেই পরিশ্রম করার মানসিকতা বেড়ে যায় তার।
নিজের জীবনের একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমার প্রি-বোর্ড পরীক্ষা চলছিল। আমাকে অনেক পড়াশোনা করতে হয়েছিল। কিন্তু রাতের খাবার খাওয়ার সাথে সাথেই আমার আতঙ্ক বাড়তো। আমি অনুভব করেছি যে কিছুই প্রস্তুত ছিল না। এখন আমি পরীক্ষায় ব্যর্থ হব।”
সেইসময় রীতিমত ঘাবড়ে গেছিলেন তিনি। এদিকে সবাই যখন বলতো যে দশম শ্রেণির পারফরম্যান্স খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটি উচ্চ শিক্ষার সঠিক দিকনির্দেশনার জন্য জরুরি সেই সময়ই পরীক্ষায় ফূল করে গেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয় এরপর আবার দ্বাদশ শ্রেণীতেও ঠিকঠাক পাশ করতে পারেননি। আত্মীয় স্বজনদের কটাক্ষ আর মায়ের সমর্থন এই দুটোকে হাতিয়ার করেই নিজেকে প্রস্তুত করতে শুরু করেন অঞ্জু।
কলেজ শুরু হলে দারুন নাম্বার নিয়ে স্নাতক ডিগ্রি হাসিল করেন তিনি। এরপর শেষ করেন এমবিএ। এবং প্রথমবারের প্রচেষ্টাতেই UPSC এর মতো বড়ো পরীক্ষায় সফলতা নিয়ে আসেন তিনি। অঞ্জুর কর্মজীবন সম্পর্কে কথা বলতে গেলে, ১৯৯১ সালে রাজকোটে একজন সহকারী কালেক্টর হিসাবে কেরিয়ার শুরু হয় তার। তারপরে তিনি ডিডিও বরোদা, গান্ধীনগরের জেলা কালেক্টর এবং শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সহ অনেক জায়গায় কাজ করেন। বর্তমানে তিনি সরকারি শিক্ষা অধিদপ্তরের সচিবালয়ের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি।